• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ, ত্রাণের জন্য হাহাকার

  চন্দনাইশ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

১৩ জুলাই ২০১৯, ২৩:৪৮
চট্টগ্রাম
বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া বাড়ি-ঘর (ছবি : দৈনিক অধিকার)

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় টানা আট দিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শঙ্খনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্রবেগে লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। ফলে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বন্যাদুর্গত এলাকায়।

এদিকে উপজেলার দক্ষিণ হাশিমপুর ইউনিয়নের বড়পাড়া পাঠানিপুল এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ যান চলাচলে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।

শনিবার (১৩ জুলাই) সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, গত আট দিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শঙ্খনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ষ্টেশন রোড ও দোহাজারী-লালুটিয়া-চৌকিদারফাঁড়ি আঞ্চলিক সড়কের কোথাও কোমর সমান পানি আবার কোথাও হাঁটু পানি ডিঙিয়ে জরুরি প্রয়োজনে দোহাজারী বাজারে আসছে মানুষ। এছাড়া দোহাজারী পৌরসভার কিল্লাপাড়া, রায়জোয়ারা, পূর্ব দোহাজারী, বাবুখান বাড়ি, দিয়াকুল, বারুদখানা, লালুটিয়া, জামিজুরী, ঈদপুকুরিয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে ঢলের পানি তীব্র গতিতে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

তীব্র গতিতে ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

পানির স্রোতে বড়ুয়া পাড়া এলাকায় ২০ ফুট জায়গাজুড়ে সড়ক ভেঙে যাওয়ার ফলে দোহাজারীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই এলাকার লোকজনের।

এদিকে উপজেলার সাতবাড়িয়া, হাশিমপুর, বৈলতলী, বরমা, কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল ডুবে প্রায় হাজার হাজার বসতঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। এসব এলাকা প্লাবিত হওয়ায় এক প্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবারের লোকজন। এ সময় বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে সরে যেতে দেখা গেছে।

দোহাজারী কিল্লাপাড়া এলাকার রাবেয়া বেগম নামের এক নারী জানান, ‘আমার অসুস্থ ছেলেকে কোলে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। পানি বেড়ে যাওয়ায় সড়কে কোন যানবাহন না থাকায় কোমড় সমান পানির মধ্যে দিয়েই দুই কিলোমিটার হেঁটে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি।’

বড়ুয়া পাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা অনিল কান্তি বড়ুয়া বলেন, প্রতিবছর বর্ষায় বড়ুয়াপাড়া সংলগ্ন এলাকা পানিতে ডুবে থাকে। এ সময় কালভার্ট না থাকায় পানি নিষ্কাশন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে তীব্র স্রোতে সদ্য সংস্কার করা সড়কটির ২০ ফুট জায়গাজুড়ে ভেঙে যাওয়ায় তারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষগুলো। এছাড়া উপজেলাজুড়ে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সীমিত পরিসরে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেক কম।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম বদরুদ্দোজা বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত যা ত্রাণ পেয়েছি তাই দেওয়া হচ্ছে। এ সময় বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারের পাশাপাশি বিত্তশালীদেরও সহযোগিতা করার আহবান জানান তিনি। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্র না থাকলেও উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে বন্যাদুর্গতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ওডি/আইএইচএন

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড