• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধান নিয়ে ‘ধান্দায়’ সিন্ডিকেট চক্র

  সাটুরিয়া প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

১১ জুলাই ২০১৯, ১৪:২২
কৃষক
পোস্টার হাতে কৃষকরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা খাদ্য গুদামে সরকারি ধান সংগ্রহ অভিযানে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করে ধান ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত কৃষকরা ন্যায্য দামে ধান বিক্রি করতে না পারলেও শতাধিক কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও কৃষিকার্ড ব্যবহার করে ধান সংগ্রহের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে এক সিন্ডিকেট চক্র।

উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সরকারি ওই নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রির জন্যে ৭শ ৪০টি কার্ড বিতরণ করা হয় কৃষকদের মধ্যে। প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছ থেকে দুই টন করে ধান সংগ্রহের কথা ছিল সমন্বয় সভায়। এতে প্রায় ৩০০ টি কার্ডে লক্ষ্যমাত্রার ৫ শতাধিক টন ধান কেনা শেষ হয়েছে। বাকি কার্ডধারীদের ধান নিয়ে ভোগান্তি শুরু হয়েছে।

বুধবার (১০ জুলাই) সাটুরিয়ার খাদ্য গুদামের প্রধান ফটকে ‘ধান সংগ্রহ শেষ’ পোস্টার লাগিয়ে দেয় খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, চলতি অর্থবছরের তাদের নিকট থেকে সরকার খাদ্য গুদামে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান সংগ্রহ করা শুরু করলেও তারা সরকারিভাবে ধান বিক্রয়ের প্রক্রিয়াটি ভালোভাবে জানেন না। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও ডিলাররা সিন্ডিকেট তৈরি করে কমিশনের শর্তে সংশ্লিষ্ট খাদ্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কৃষকের ধান কম মূল্যে ক্রয় করে। অপর দিকে বিভিন্ন বাজার থেকে ধান ক্রয় করে ওইসব কৃষকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র ও কৃষিকার্ড ব্যবহার করে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা খাদ্য গুদামে সরকারি মূল্যে ধান বিক্রি করে। এতে মণ প্রতি ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট চক্র।

অভিযোগে আরও জানা যায়, অন্যান্য জেলা থেকে ধান সংগ্রহ করে স্থানীয় কৃষকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও কৃষিকার্ড ব্যবহার করে তা খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা হয়েছে।

সরেজমিনে বুধবার দুপুরে দেখা যায়, কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা ও কৃষিকার্ড প্রাপ্ত উপজেলার বেংরোয়া গ্রামের ঠান্ডু বেপারীর ছেলে মো. বাবলু ২ টন, হরগজ গ্রামের আব্দুল আজিজ মিয়ায় ছেলে আনোয়ার হোসেন ২ টন, গওলা গ্রামের নুর বকসের ছেলে মো. শাহজাহান ১ টন ও মালশী গ্রামের মো. খোকন মিয়ার ৭৫ মণ ধান নিয়ে এসেছে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা জন্য। ফলে তাদের ধান গ্রহণ না করায় ব্যাধ্য হয়ে ধান ফেরত নিতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে ও কৃষিকার্ড প্রাপ্ত উপজেলার বেংরোয়া গ্রামের মো. বাবলু, হরগজ গ্রামের আনোয়ার হোসেন, গওলা গ্রামের মো. শাহজাহান ও মালশী গ্রামের মো. খোকন মিয়ার বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে আমাদের ধান সরবরাহ করা জন্য বস্তা প্রদান করেন। কিন্তু বস্তা ভরে ধান দেওয়ায় জন্য আসলে আমাদের ধান না নিয়ে বলেন, ধান সংগ্রহ করা শেষ আর ধান নেওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমাদের ২৬ টাকা কেজি দরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৫০৯ টন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত কার্ড বিতরণ করায় এ অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাটুরিয়ায় কোনো সিন্ডিকেট হয়নি। কৃষিকার্ড প্রাপ্ত কৃষকরাই ধান সরবরাহ করেছে।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড