হাসান আরেফিন, ঝালকাঠি
ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ায় শিশু পাচার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অনেক কমে গেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের লেখাপড়া।
গত কয়েক দিন ধরে জেলার রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ায় এলাকায় শিশু পাচারকারীদের (কল্লাকাটা/ছেলেধরা) নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানকে নিজেরাই স্কুলে আনা-নেওয়া করছেন, আবার অনেকে শিশুদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলা থেকে মো. মিরাজ হোসেন (৩০) নামে এক সন্দেহভাজন শিশু পাচারকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। এ খবর জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে শিশু পাচার গুজব আরও জোরালো হয়। ফলে অধিকাংশ অভিভাবকরাই শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক স্থানীয়দের বরাতে জানান, আওরাবুনিয়া এলাকার একটি বাড়িতে রাত ৮টার দিকে ঘরের জানালা দিয়ে চেতনা নাশক স্প্রে নিক্ষেপ করে মিরাজ। এরপর মিরাজকে ধাওয়া করে স্থানীয়রা। বাইসাইকেলে করে পালানোর একপর্যায়ে সাতানি বাজার এলাকায় এসে ধরা পড়ে সে। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ওই শিশুর পরিবার।
এদিকে শিশু পাচারকারী আটকের খবরে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের উপস্থিতি অনেকটাই কমে গেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. রেজোয়ান হোসেন জানান, পাচারকারীদের ভয়ে বিদ্যালয়ে শিশুদের উপস্থিতির হার কমে গেছে। এ বিদ্যালয়ে ১১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর আগে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে ৮০-৯০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকত। অথচ গত দুদিন ধরে মাত্র ৩৯ জন শিক্ষার্থী স্কুলে আসে।
রাজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খানম জানান, গত তিন দিন ধরে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কম। বিশেষ করে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা।
রাজাপুর সদরের স্থানীয় অভিভাবক চঞ্চল কর্মকার জানান, তার ছেলে শিশু শ্রেণির ছাত্র। গত দুই দিন ধরে তাকে সঙ্গে লোক দিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠাতে হচ্ছে। বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন দৈনিক অধিকারকে জানান, কাঁঠালিয়ায় শিশু পাচারকারী সন্দেহে এক যুবকের আটকের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ওডি/ এসএএফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড