সারাদেশ ডেস্ক
টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে স্কুলছাত্র সজিব মিয়াকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেন ওরফে হৃদয় ও নিহত সজিবের বন্ধু মো. সজিব। নিহত সজিব মিয়ার দূর সম্পর্কের চাচা মো. মনিরুজ্জামানের প্ররোচনায় তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
শুক্রবার (২১ জুন) পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ ও মো. সজিব টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামি পুলিশের স্পেশাল আর্মড ফোর্সেস (এসএএফ)-এর কনস্টেবল মোশারফ হোসেন হৃদয় বঙ্গবন্ধু সেতু কেপিআই ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার চেতরা গ্রামের মো. আছির উদ্দিনের ছেলে। অপর আসামি মো. সজিব ভূঞাপুর উপজেলার পলশিয়া গ্রামের মোকাদ্দেস আলীর ছেলে।
টাঙ্গাইল আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমন কর্মকার তাদের জবানবন্দি গ্রহণের পর তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহত সজিবের ওই চাচা মো. মনিরুজ্জামানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনিরুজ্জামান টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনাবাড়ি গ্রামের সেকান্দার আলীর ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানা যায়, তারা উভয়েই জবানবন্দিতে জানিয়েছেন- নিহত সজিব মিয়া গত ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় বেড়াতে যায়। তখন সজিবের ওই চাচার প্ররোচনায় ওই দিন রাতে সজিবকে তারা দুজন কোমল পানীয়ের সঙ্গে কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। পরে সজিব ঘুমিয়ে পড়লে মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর তার লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রাখে তারা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় বিপিএম শনিবার (২২ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, কালিহাতী উপজেলার হাতিয়া উত্তরপাড়া রাস্তার পাশের জঙ্গল থেকে গত ১৬ জুন বিকালে ১৭-১৮ বছরের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই লাশটিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনাবাড়ি গ্রামের সামাদ মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগম তার ছেলের লাশ বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনার পরদিন জাহানারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ জানায়, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই ঘটনার সঙ্গে কনস্টেবল মোশারফ ও মো. সজিবের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করেন তারা। পরে আসামিদের বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় নিহত সজিব মিয়ার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনের শ্বশুরবাড়ি রংপুরের গঙ্গাচরা থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা উভয়ে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হন তারা।
অন্যদিকে, গ্রেফতারকৃত মনিরুজ্জামান সজিবদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। শনিবার (২২ জুন) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড