ফেনী প্রতিনিধি
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে এক কোটি ৩৯ লাখ টাকার একটি চেক জালিয়াতি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে তাকে কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। এ দিকে এ মামলার চার সাক্ষীর মধ্যে নিয়মিত শুনানির অংশ হিসেবে দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অসিম কুমার দে।
জানা যায়, ফেনীতে উম্মুল কোরআন ক্যাডেট মাদ্রাসার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকাকালে উম্মুল কুরা ডেভেলপার লিমিটেড নামে একটি আবাসন সমিতির ১০৯ জন সদস্যের নামে থাকা এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ সিরাজ।
সমিতির সাধারণ সভায় তা প্রমাণিত হলে ওই সময় সমিতির ১০৯ সদস্যের পক্ষে আবদুল কাইয়ুমের নামে ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার একটি চেক দেন অধ্যক্ষ সিরাজ। ইসলামী ব্যাংক ফেনী কলেজ রোড শাখায় চেকটি বার বার প্রত্যাখ্যান হলে আবদুল কাইয়ুম বাদী হয়ে গত ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর আদালতে একটি মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি শাহ মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, সোমবার বাদীপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। জেরার জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। আমরা এ মামলায় আসামির শাস্তি চেয়েছি।
উম্মুল কুরা ডেভেলপার লিমিটেডের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আব্দুল মালেক বলেন,কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রির সুবিধায় চেয়ারম্যান সিরাজ উদ দৌলাকে একক ক্ষমতার অধিকার দেয়া হয়। এ সুযোগে ২০১৭ সালের আগস্টে ১০৯ জনের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পদ একা হাতিয়ে নেন অধ্যক্ষ সিরাজ।
তার দাবি, লেনদেন ও ব্যাংকের ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে এমন সিদ্ধান্ত নেন প্রতিষ্ঠানের ইসি কমিটির সদস্যরা। তবে এমন সিদ্ধান্ত কাল হয়ে দাঁড়ায় তাদের জন্য। ওই সুযোগে কৌশলে পুরা টাকাই হাতিয়ে নেন সিরাজ। পরে সদস্যরা টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিলে ২০১৭ সালের ১৬ আগস্ট তিনি ওই টাকার একটি চেক দেন। ২৭ আগস্ট চেকটি ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়। ৩০ আগস্ট লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর সমিতির সদস্যরা সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১৮ সালে এ মামলায় ২১ দিন জেলও খাটেন অধ্যক্ষ সিরাজ।
মামলার বাদী আবদুল কাইয়ুম নিশান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির অধীনে থাকা উম্মুল কোরআন মাদ্রাসা ভবনটি ২০১৭ সালে রাজু, সোহাগ, নয়ন ও মতুর্জা নামে কয়েক সন্ত্রাসীর সহায়তায় সিরাজ উদ দৌলা দখল করেন। উম্মুল কুরা সমিতির চেয়ারম্যান থাকাকালীন এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন সিরাজ। ইসলামী ব্যাংক ফেনী কলেজ রোড শাখায় চেকটি বারবার প্রত্যাখ্যাত হলে ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর আদালতে মামলা করা হয়।
আবদুল কাইয়ুম নিশান আরও বলেন, ফেনীর মহিপাল এলাকায় কোম্পানির নামে থাকা সাড়ে ১৬ শতাংশ জমি নিজের নামে করে নেন সিরাজ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ফেনীর পাঠান বাড়ির মোড় এলাকায় উসমান ফার্নিচার নামে জমিরও দখল নেন তিনি। এই কাজে তাকে ভ্যান নয়ন নামে একজন সহায়তা করেন। উম্মুল কুরা ডেভেলপারের অধীনে থাকা এসব সম্পত্তি দখল করে সব টাকা নিজের নামে ব্যাংকে জমা করেন সিরাজ। কোম্পানির সদস্যদের টাকা আত্মসাৎ করে সিরাজ ফেনীর পাঠান বাড়ির মোড়ে গড়ে তোলেন ‘ফেরদৌসী মঞ্জিল’ নামে আলিশান বাড়ি ।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড