• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নদী পুনঃখননে অনিয়ম, প্রশাসনের অসন্তোষ

  মাগুরা প্রতিনিধি

১২ জুন ২০১৯, ০০:৩০
নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন
নবগঙ্গা নদীর পুনঃখনন (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রায় সাড়ে ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মাগুরা শহর সংলগ্ন নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন প্রকল্পের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসনের মনিটরিং কমিটি। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন বাকি। অথচ কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫০ ভাগ বলে জানিয়েছেন তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে মাগুরা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর ১১ কিলোমিটার এলাকায় চলছে খনন কাজ। চারটি প্যাকেজে ৪৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে খনন কাজ চালানো হচ্ছে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। যাদের পক্ষে স্থানীয় দুই ঠিকাদার এহিজার রহমান লেনিন এবং সাখাওয়াত হোসেন কাজ করছেন।

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২ জুলাই থেকে নবগঙ্গা নদীর খনন কাজ শুরু হয়েছে যা চলতি বছরের ২০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে খনন কাজ শেষের পথে বলে তারা দাবি করলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।

মাগুরা জেলা প্রশাসনের মনিটরিং কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) মাহবুবুর রহমান জানান, নবগঙ্গা নদীর ১১ কিলোমিটার এলাকায় পুনঃখনন কাজে ধীর গতির অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। আগামী ২০ জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। বিভিন্ন সময় আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারের কাজের অগ্রগতি ভালো না। ইতোমধ্যে মাত্র ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর মাত্র ১০ দিনের মধ্যে বাকি ৫০ ভাগ কাজ শেষ কিভাবে করবে সেটিই দেখার বিষয়। এ দিকে নদীতে পানি বেড়ে যাচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করা না গেলে প্রকল্পের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ হবে না। দেশীয় ড্রেজার দিয়ে নদী খননের কাজ চলছে। ভালো মানের ড্রেজার ব্যবহার করা না গেলে কাঙ্ক্ষিত মানের ফল পাওয়া যাবে না।

মঙ্গলবার (১১ জুন) সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং টিম শহর সংলগ্ন পারনান্দুয়ালী এলাকায় নদী খনন কাজ দেখেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সুফিয়ান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম খান মোজাহেদি, সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শফিউল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম, ঠিকাদারের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।

নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, নবগঙ্গা নদী খননে ঠিকাদারের গাফিলতিতে দীর্ঘ সময় লেগে গেছে। নদীর ভেতরের অংশে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কথা থাকলেও তারা অধিকাংশ সময়ই মাটি না কেটে সময় ক্ষেপণ করেছেন। এদিকে বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি এসে যাওয়া ও স্লুইস গেট বন্ধ করে দেওয়ায় নদীর এ অংশে পানি বেড়ে গেছে। আর এই ওজুহাতে প্রকল্পের শেষ দিকে এসে তাড়াহুড়ো করে ঠিকাদার দেশীয় অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে নামকা ওয়াস্তে মাটি কাটছেন। যার ফলে নদীর কোথাও সঠিক মাপে মাটি কাটা হচ্ছে না। দেশীয় এই ড্রেজারে নদীর তলদেশে সমান মাপে মাটি কাটা সম্ভব না বলে অভিযোগ করেন তারা।

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম খান মোজাহেদি জানান, নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন প্রকল্পটি অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী নদীর চওড়ায় ৮০ মিটার ও গভীরতায় ৪ মিটার পর্যন্ত খনন করা হচ্ছে। নদী খননের ফলে শেখ কামাল ব্রিজ যেন কোনো ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে নদী খনন কাজের ঠিকাদার মীর সুমন কাজের ধীরগতির কথা অস্বীকার করে জানান, প্রকল্পের যে প্রাক্কলন আছে সে অনুযায়ীই কাজ চলছে। সঠিক সময়ে আমরা কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড