নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে স্ত্রী নির্যাতন করায় পুলিশের এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। রোববার (২৬ মে) দুপুরে নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আদালতের বিচারক আমাতুল মোর্শেদা এ আদেশ দেন।
অভিযুক্ত সাইফুল্লা গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার নিজামকান্দি গ্রামের শাহিদুল ইসলামের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর সাইফুল্লার সাথে নড়াইলের নড়াগাতি থানার পাটনা গ্রামের গঞ্জর খানের মেয়ে রাশিদা খানমের বিয়ে হয়। তাদের ১৩ মাস একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।
একপর্যায়ে স্বামী সাইফুল্লা তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ তু্লেন রাশিদা। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে যৌতুক দাবি করলে রাশিদার বাবার বাড়ি থেকে সাইফুল্লাকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া হয়। এরপর ঢাকায় জমি কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন বলে মামলায় উল্লেখ করেন তিনি। টাকা দিতে না পারায় গত ২ জানুয়ারি সকালে রাশিদাকে ঢাকার বাসায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন সাইফুল্লা।
এরপর শিশু সন্তানসহ রাশিদাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় রাশিদা খানম বাদী হয়ে গত ৩১ মার্চ নড়াগাতি আমলি আদালতে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন।
গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল জজকোর্ট ভবনের নিচতলায় বাদী ও বিবাদীসহ দুইপক্ষের আত্মীয়-স্বজন, পিপি ও আইনজীবীর উপস্থিতিতে সিদ্ধান্তে ২ মে আসামি পক্ষ বাদীর বাবার বাড়ি থেকে রাশিদাকে স্বামীর সংসারে নিয়ে যাবে। পরে রাশিদা ও তার সন্তানকে স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার নিজামকান্দি গ্রামে নিয়ে যায়। এরপর পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ৬ মে রাতে স্বামী সাইফুল্লা রাশিদাকে আবারও নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখেন। এ খবর পেয়ে রাশিদার ভাই ও ভাবি গত ৭ মে তাকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে সাইফুল্লা তাদের ১৩ মাসের শিশু সন্তান জোর করে রেখে দেয়। এ ঘটনায় রাশিদা নড়াইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার শিশু সন্তান উদ্ধারের জন্য মামলা করেন। তবে এখনো শিশু সন্তান ফিরে পায়নি রাশিদা। এদিকে আসামি এএসআই সাইফুল্লা মীমাংসার শর্ত ভঙ্গ করায় গত ১৬ মে আদালতে অন্তবর্তীকালীন জামিন বাতিলের আবেদন করেন রাশিদা। পরে ২৬ মে রাশিদার স্বামী আশুলিয়া থানার প্রত্যাহারকৃত এএসআই সাইফুল্লার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ আদেশ দেন আদালত।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রাশিদা খানম তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী চরমভাবে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তার যথাযথ শাস্তি দাবি করছি। আমাকে নির্যাতনের কারণে তাকে ঢাকার আশুলিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করেছে। তবুও নমনীয় হয়নি সাইফুল্লা। আমার শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে চাই।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড