বরগুনা প্রতিনিধি
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত ক্লাসের নামে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার সরকারি নীতিমালাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চারটি ব্যাচে প্রতিদিন কোচিং চালাচ্ছেন বলে এলাকার একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (২৫ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গর্জনবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার প্রায় ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন।
শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু করে বেলা ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা করে চারটি ব্যাচে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। এতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাঠদানের বিনিময়ে তিনি অর্থ নিয়ে থাকেন।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র গণিত বিষয়ে পাঠদান করে তাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে সম্মানী নিয়ে থাকেন প্রধান শিক্ষক।
দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, হেড স্যার কোচিং এ আমাদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করেন।
এলাকার মো. ফোরকান বলেন, ওই স্কুলে হেড মাস্টারের নেতৃত্বে ব্যবসা বাণিজ্যের মতো রাতে ও সকালে প্রতিদিন বিভিন্ন ক্লাসের কোচিং চলে এবং কোচিংয়ের বিনিময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নেন।
স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে জানা যায়, কিছুদিন আগে এক হিন্দু মেয়ে শিক্ষার্থী কোচিংয়ের নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে এক মুসলমান ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যায়। দুইদিন পর ওই ছেলে মেয়েকে নিয়ে এসে প্রধান শিক্ষক ছেলের পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে শালিস ব্যবস্থার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেও পারেননি। পরে এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার কোচিংয়ের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, এলাকার শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মতামত নিয়ে বিশেষ করে তাদের দরখাস্তের ভিত্তিতে পাঠদান করছি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নলটোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, এই স্কুলে কোচিং চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। এরপরেও যদি কোচিং চলে তাহলে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এ ব্যাপারে বরগুনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, কোচিং বাণিজ্য বন্ধের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কোচিং বাণিজ্য শতভাগ বন্ধ করতে পেরেছি এ দাবি আমি করছি না, তবে গর্জনবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যাপারে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেব। তদন্ত করে প্রধান শিক্ষক বা যে কেউ এ ব্যাপারে দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড