ধান কাটলেন জেলা প্রশাসক
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
‘কৃষকরা একা নয় আমরা আছি তাদের পাশে’ এই স্লোগান নিয়ে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। মঙ্গলবার (২১ মে) সকালে জেলার জীবননগরে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তিনি এ কার্যক্রম শুরু করেন।
কৃষকদের চরম দুঃসময়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় খুশি কৃষকরাও। ধানের মূল্য না থাকাসহ চলতি বোরো মৌসুমে সারা দেশের মতো চুয়াডাঙ্গাতেও দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। শ্রমিক সঙ্কটের পাশাপাশি মজুরি বেশি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। এমন সঙ্কটময় সময়ে প্রান্তিক কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।
মঙ্গলবার সকালে- জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার ফরহাদ আহমদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ ইয়া খানকে সঙ্গে নিয়ে জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা গ্রামে জেবুন নেছা নামে এক নারীর ১৫ কাঠা জমির ধান কাটতে শুরু করেন।
দ্রুত এ খবর উপজেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারমিন আক্তার, ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান ও স্কাউটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় জেলা প্রশাসকের দেখাদেখি তারাও ওই নারীর পাকা ধান কেটে দেন।
ধান ক্ষেতের মালিক জেবুন নেছা জানান, তার ১৫ কাঠা জমির ধান পেকে যাবার পরও টাকার অভাবে তিনি দিনমজুর দিয়ে ধান কাটতে পারছিলেন না। তাই মঙ্গলবার তিনি ও তার ছেলে শাহ আলম ক্ষেতের ধান কাটতে শুরু করেন। এর পরই জেলা প্রশাসকসহ সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা তার জমির অবশিষ্ট ধান কেটে দেন।
জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস জানান, আমরা কৃষকের সন্তান, কৃষকদের এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদেরও সৌভাগ্যবান মনে করছি। কৃষকরা সাময়িক শ্রমিক সঙ্কটে পড়েছে হয়তো, তবে সেটা কেটে যাবে। এখন থেকে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
ধান কাটার পর জীবননগর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন।
ওডি/এএসএল
