সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা জেলার একটি বৃহত্তর বাণিজ্য কেন্দ্র কদমতলা বাজার। এখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ব্যবসা হয়। সরকার এখান থেকে বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেন। কিন্তু এত বড় বাজারে ময়লা ফেলার জন্য নেই কোন নির্দিষ্ট স্থান। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনকার ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন বাজার ঘেঁষে প্রবাহিত কদমতলা খালে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কদমতলা খালের গা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কদমতলা বাজার। এখানে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সপ্তাহের ৭ দিনই এখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্য পাওয়া যায়। সপ্তাহের সোমবার এবং বৃহস্পতিবার এই দুদিন এখানে হাট বসে। বিক্রি হয় গৃহপালিত পশু, পাখি, মাটির পণ্যসহ প্রয়োজনীয় সব পণ্যসামগ্রী। কিন্তু বিশাল এ বাজারে ময়লা ফেলার জন্য নেই কোন নির্দিষ্ট স্থান। ফলে বাজারের সব ময়লা ফেলা হয় বাজার সংলগ্ন খালে। এ খালের পাশেই রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। খালে ফেলা কাঁচামালের উচ্ছিষ্ট আর মাংসের বাজারের ময়লা পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে স্কুলটিতে বসে ঠিকভাবে শিক্ষাকার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না বলে জানান স্কুলের শিক্ষক।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষিকা লহলী মন্ডল বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে ঠিকভাবে পাঠদান করা যাচ্ছে না। গ্রীষ্মকালে তো দুর্গন্ধ একটু কম থাকে বর্ষা মৌসুমে এসব ময়লা পচে আরও দুর্গন্ধ ছড়ায়। খালের ধার দিয়ে একটি প্রাচীর নির্মাণ করা গেলে হয়তো দুর্গন্ধ একটু কম আসতো বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে খালে ময়লা ফেলতে আসা আবদুল গফুরের সাথে কথা হয়। তিনি কেন জানান, ‘সবাই ফেলে তাই আমিও ফেলি।’
ময়লার দুর্গন্ধে পাশের স্কুলে বসে ক্লাস করা যায় না। এক সময়ের প্রবাহমান কদমতলা খাল ময়লার কারণে মরে যাচ্ছে তবুও ময়লা ফেলছেন, সবাই ফেলে তাই আপনিও ফেলবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্টো প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তাহলে কোথায় ফেলবো? ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা তো নেই। আমিও বুঝি এখানে ময়লা ফেলা ঠিক না তবুও উপায় না পেয়ে ফেলতে হয়।
একই প্রশ্নের উত্তরে মুরগী ব্যবসায়ী লিটন ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে এখানে ময়লা ফেলি। ময়লা তো আর বাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। এখানে কোন ডাস্টবিন নেই যেখানে ময়লা ফেলবো। বাজারে কয়েকটি ডাস্টবিন স্থাপন করা জরুরি।
এ ব্যাপারে কদমতলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, কদমতলা বাজারটি সাতক্ষীরা পৌরসভা, আগরদাঁড়ি ইউনিয়ন এবং লাবসা ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। এ বাজার পৌরসভার উদ্যোগে প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হয়। যেখান থেকে পৌরসভা ১৫-২০ লক্ষাধিক টাকা বাৎসরিক আয় করে। ময়লা যেগুলো খালে ফেলা হয় তার বেশিরভাগ অংশই বাজারের পৌর এলাকার। পৌরসভার উচিত এখানে কয়েকটি ডাস্টবিন স্থাপন করা।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিক উদ-দৌলা সাগর বলেন, আসলে অপরিকল্পিতভাবে বাজারটা গড়ে ওঠায় ওখানে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। কদমতলা বাজারে এখন এমন একটুও ফাঁকা জায়গা নেই যেখানে আমরা ডাস্টবিন নির্মাণ করব বা ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট করে দেব। বাজারের ভেতর গাড়ি ঢোকার জন্যও পর্যাপ্ত জায়গা নেই তাই এ সমস্যার সমাধান করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবে আমি শিগগিরই বাজার কমিটির সাথে কথা বলে ট্রাকে না হোক ভ্যানে করে হলেও খালের ধার থেকে ময়লা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করবো।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড