• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

টাকা দিয়েও পেল না বিদ্যুৎ, নয়ছয় কর্তৃপক্ষের

  শরীয়তপুর প্রতিনিধি

১৬ মার্চ ২০১৯, ১১:৪২
শরীয়তপুর বিদ্যুৎ অফিস
শরীয়তপুর বিদ্যুৎ অফিস (ছবি : দৈনিক অধিকার)

টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার কাগদি ও আমতলী গ্রামের ৮টি পরিবার।

অভিযোগে জানানো হয়, শরীয়তপুর বিদ্যুৎ সরবরাহ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লি. (ওজোপাডিকো) সদর উপজেলার কাগদি ও আমতলী গ্রামে ৮টি বিদ্যুৎ এর খুঁটি দেওয়ার কথা বলে, ৬টি বিদ্যুৎ এর খুঁটি দিয়ে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে।

শনিবার (১৬ মার্চ) সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, ৮টি খুঁটি দেওয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে ৬টি খুঁটি। দুইটা খুঁটির জন্যে ৮টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পাইনি। কবে পাবে তাও অনিশ্চিত। পরিবার গুলো শরীয়তপুর বিদ্যুৎ সরবরাহ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লি. (ওজোপাডিকো) এর বিদ্যুৎ পাবে জেনে, ৮ পরিবার পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়নি। ২ বছর হয়েছে খুঁটি দিবে বলে টাকা নিয়েছে। টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ সংযোগ পেল না।

বিদ্যুৎ এর খুঁটির জন্য টাকা তোলার দায়িত্বে থাকা খালেক ঢালী বলেন, দুই বছর আগে টাকা দিয়ে দুই মাস হয়েছে আংশিক বিদ্যুৎ পেয়েছি। ওয়াজদ্দিন মাতব্বরের বাড়ি থেকে মোহাম্মদ আলী মাতব্বরের বাড়ি পর্যন্ত ৮টি পরিবার, মাত্র দুটি খুঁটির জন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রইল। এখন টাকা পয়সা নিয়ে পড়েছি বিপদে।

কাগদি গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মাতব্বর বলেন, বিদ্যুৎ বঞ্চিতদের দাবি টাকা নিয়েছে, বিদ্যুৎ দেবে। যেভাবে কথা হয়েছে, সে ভাবে কাজ করতে হবে।

বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত আমতলী গ্রামের, আনোয়ার হোসেন ঢালী, হাসেম ঢালী, ইমন হোসেন, আলী হোসেন, জলিল মল্লিক দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমরা এক বছর যাবৎ খালেক ঢালীর কাছে বিদ্যুৎ লাইনের জন্য টাকা দিয়েছি। সবাই আলোতে থাকলেও আমরা ৭-৮ ঘর রয়েছি অন্ধকারে। আমরা টাকা দিয়েছি। বিদ্যুৎ চাই।

এদিকে গ্রামের আলী আজম (৪৫) ও খালেক ঢালী (৫৫) বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলে ৮টি পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পড়েছেন বিপদে।

গ্রামের লোকজন থেকে টাকা আদায়কারী আলী আজম বলেন, ১৫ জন গ্রাহক মিলে মোট ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি শরীয়তপুর (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ অফিসের রোকন উদ্দিনের কাছে। সে বলেছে ১৫ জন গ্রাহকের জন্য ৮টি খুঁটি লাগবে। প্রতি খুঁটিতে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এক বছর হয়ে যাওয়ার পরেও খুঁটি দিতে পারেনি। আমরা রোকন উদ্দিনকে চাপ দিলে। তিনি ফরিদপুরের ঠিকাদার ওয়াসিমের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেয়। ওয়াসিম বলে ৬টা খুঁটি দেওয়া যাবে। টাকা লাগবে ৮০ হাজার টাকা। ঠিকাদার ছয়টি খুঁটি দিয়ে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে যোগাযোগ করেও কাজ হচ্ছে না। তারা কথা দিয়ে কাজ করে নাই। পরিবার গুলোর কাছ থেকে টাকা নিয়ে পড়েছি বিপদে।

শরীয়তপুর বিদ্যুৎ অফিসের স্টোর কিপার রোকন উদ্দিন বলেন, আমি শুধু ১০ হাজার টাকা নিয়েছি। সব লেনদেন তারা ফরিদপুর ওজোপাডিকোর ঠিকাদার ওয়াসিমের সঙ্গে করেছে।

ওয়াসিমের সঙ্গে এই ব্যাপারে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিনে গিয়ে যানা যায়, ফরিদপুরের ঠিকাদার ওয়াসিম শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নসহ আংগারিয়া, চিতলিয়া, কাশিপুর ইউনিয়ন গুলো থেকে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী মাধ্যমে এলাকার লোকের মাধ্যমে কোটি টাকার খুঁটি বাণিজ্য করেছে। একটি মানুষও বিনা টাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেনি।

এ বিষয়ে শরীয়তপুর বিদ্যুৎ (ওজোপাডিকো) অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইদ্রিস আলী মোল্লা দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি ফরিদপুর ওজোপাডিকোর প্রজেক্ট ডিভিশন এর প্রধান জিএম মাহবুব প্রধান এর কাছে বললে, কাজ হবে।

শনিবার (১৬ মার্চ) ঘটনাটি প্রজেক্ট ডিভিশন এর প্রধান জিএম মাহবুবকে মুঠোফোনে জানালে তিনি দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমরা থাকি ফরিদপুরে। অনেক দূরে। ঠিকাদার থাকে ফরিদপুরে। ওই খানে লোকাল থাকে রোকন। সে কিন্তু ওগুলো পারে না। ঠিকাদারও পারে না। সরকারি কাজ এগুলো। ফ্রি হয়। সরকারি কাজ ফ্রি অফ কস্ট এ হওয়ার কথা। এখন কি কারণে লোকজন টাকা দিয়েছে আর এরা নিয়েছে। এটাই একটু জানা দরকার। অবশ্যই এরা অপরাধ করেছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যদি টাকা নিয়ে থাকে তা হলে ফেরত দেবে। আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেব।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড