অধিকার ডেস্ক
বাউফলে শুরুতেই ব্যপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে চলছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাল বিক্রি কার্যক্রম। প্রকৃত হতদরিদ্ররা কার্ড না পাওয়া, ওজনে কম ও নিম্নমানের চাল দেয়া, নিয়মিত বিক্রি না করাসহ নানা ধরণের অনিয়ম করে যাচ্ছেন দলীয়ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলাররা।
চাল বিক্রির কার্যক্রম নিয়ে উপজেলার সর্বত্র হতদরিদ্রদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে এলেও অজ্ঞাত কারণে কোন প্রতিকার হচ্ছে না। অপরদিকে, হতদরিদ্রদের তালিকা নিয়ে প্রশাসনের তালবাহানার কারণে দাশপাড়া ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়েছে। একারণে ওই ইউনিয়নে এখনো শুরু হয়নি চাল বিক্রি কার্যক্রম।
সূত্র থেকে জানা গেছে, বাউফলের ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১৯ হাজার ২৩২ জন হতদরিদ্র পরিবারকে এই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে। জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ গত ১ অক্টোবর এই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। এরপর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চাল বিক্রিতে নানা ধরণের অনিয়মের খবর পাওয়া যায়।
গত কয়েকদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাল বিক্রি কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, অনেক ইউনিয়নেই হত-দরিদ্রদের পরিবর্তে চাল পাচ্ছেন স্বচ্ছল ব্যাক্তিরা। এমনকি তালিকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নামও রয়েছে। অধিকাংশ ডিলারদের ঘরে চাল মাপার দারি পাল্লা নেই।
চাল দেয়া হচ্ছে বালতি মেপে। ৩০ কেজির টাকা নিয়ে ২৫/২৬ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে বলে হতদরিদ্ররা অভিযোগ করছেন। দেয়া হচ্ছে নিম্নমানের চাল। চাল দেয়ার পর হতদরিদ্রদের হাতে কার্ড ফিরিয়ে না দিয়ে ডিলাররা কার্ড রেখে দিচ্ছেন। চাল বিক্রির সময় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারদের মনিটরিং করার কথা থাকলেও দেখা মেলেনি তাদের।
এ ছাড়া অভিযোগ উঠেছে, তালিকায় নাম লেখাতে স্থানীয় ইউপি সদস্যরা প্রত্যেক সুবিধাভোগীর থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা নিয়েছেন। কনকদিয়া বাজারে চাল বিক্রির সময় ওই ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের শতাধিক হতদরিদ্রদের কার্ড না পাওয়ায় বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা তালিকাভুক্তির জন্য ইউপি সদস্য মো. নুরুল ইসলামকে ২০০ করে টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তালিকায় তাদের নাম নেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় সকল ইউনিয়নেই একই পরিবারে একাধিক কার্ড দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় কে কার পক্ষাবলম্বন করেছেন সে মাপকাঠিওে তালিকা প্রস্তুত করেছেন মেম্বাররা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ইউপি সদস্য জানান, আমি নাম দিয়েছি কিন্তু তালিকায় তাদের নাম কেন নেই তা আমার জানা নেই। টাকা নেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফটোকপি করার জন্য ওই টাকা নেয়া হয়েছে। এ সময় দেখা গেছে ওই ওয়ার্ডের ডিলার কনকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মো. ইউনুচ জমাদ্দার একটি ফার্মেসীতে বসে নামবিহীন মাষ্টাররোলে কার্ডধারী হতদরিদ্রদের স্বাক্ষর নিচ্ছেন। স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে কার্ড ফেরত দিচ্ছেন না।
কার্ড কেন ফেরত দিচ্ছেন না জানতে চাইলে ডিলার বলেন, কার্ড হারিয়ে ফেলবে বিধায় ফেরত দেয়া হচ্ছে না। মদনপুরা ইউপির চন্দ্রপাড়া এলাকায় দেখা গেছে হতদরিদ্রের তালিকায় শ্রমিক হিসেবে নাম থাকা অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মো. আইয়ুব আলী খান চাল নিচ্ছেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড