• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

'সরকার ধানের ন্যায্য মূল্য না দিলে কৃষক কীভাবে বাঁচবে?'

  শেরপুর প্রতিনিধি

০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:৪৮
শেরপুর
ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে কৃষক

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এবারের আমন আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে অন্যান্য জিনিসপত্রের তুলনায় শুধুমাত্র ধানের দাম কম থাকায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানান।

নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার আমন আবাদে ২২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছিল। এর মধ্যে ৩ হাজার ৮শ হেক্টর হাইব্রিড জাতের, ১০ হাজার ৩৮০ হেক্টর উফসী জাতের ও ৮ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান লাগানো হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক তাদের সোনার ফসল কাটতে শুরু করেছেন।

স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী হাফেজ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, পাইজাম ধানের বর্তমান বাজার দর ৮৫০ থেকে ৯শ টাকা, ব্রি-ধান ৪৯ জাতের ৬শ থেকে ৬৫০ টাকা, স্বর্ণলতা (স্থানীয়) জাতের ৫৫০ থেকে ৬শ টাকা, ধানী গোল্ড (হাইব্রিড) জাতের ধান ৬২০ থেকে ৬৩০ টাকা আর সুগন্ধী তুলসীমালা ও চিনি শাইল জাতের ধান ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩শ টাকা দরে কিনছেন।

শেকেরকুড়া গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ১ একর জমি আবাদ করতে কৃষকের খরচ হয় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বীজতলা তৈরি বাবদ ১ হাজার, জমি চাষ বাবদ ৩ হাজার টাকা, রোপন বাবদ ৩ হাজর, সার-বিষ বাবদ ৪ হাজার, আগাছা দমন বাবদ ৩ হাজার, ধান কাটা বাবদ ৫ হাজার, মাড়াই বাবদ ২ হাজার টাকাসহ উৎপাদন খরচ হচ্ছে ২১ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষকের নিজের শারীরিক শ্রমতো আছেই। আর দিন হাজিরা কাজের লোকের মজুরি ৫শ টাকা।

দুধকুড়া গ্রামের কৃষক সাবের উদ্দিন বলেন, ব্রি-ধান ৪৯ জাতের বর্তমান বাজার দর ৬শ টাকা করে হলে একর প্রতি ৪০ মণ (শুকনা ধান) উৎপাদন ধরে হিসাব করে বিক্রয়মূল্য আসে ২৪ হাজার টাকা। এখান থেকে উৎপাদন ব্যয় ও কৃষকের নিজের শ্রম বাদ দিলে কিছুই লাভ থাকে না। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান বিক্রি করে সংসার চালায়। অন্যান্য জিনিসের তুলনায় শুধুমাত্র ধানের দামই কম। তাই সরকার যদি বিদেশ থেকে চাল আমদানি না করে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য দরে ধান বা চাল ক্রয় করত তাহলে কৃষকরা কোনোমতে চলতে পারত।

আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগেও ১০ টাকা কেজি দরে সরকার চাল বিক্রি করেছে। এর প্রভাব বর্তমানে ধানের বাজারে পড়েছে। তাই কৃষক দেশের মানুষের খাদ্যের যোগান দেয় সরকার যদি কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্য না দেয় তাহলে কৃষক কীভাবে বাঁচবে?

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ ইকবাল বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার নালিতাবাড়ীতে বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকের অভিযোগ ঠিক না, তারা এবারের বাম্পার ফলনে ধানও বেশি পেয়েছে। সরকার ১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকা দরে ক্রয় করার সিন্ধান্ত নিয়েছে। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড