• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোটে কে জিতবে, জনমনে কৌতুহল

  গাইবান্ধা প্রতিনিধি

১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:২০
গাইবান্ধা
প্রতীকী ছবি

সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সব দলের অংশ গ্রহণে দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করেছে। অনেক দলেই তা শেষও করেছে। গাইবান্ধা-৩ আসনে পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করছে এবং করবেন। কিন্তু জাতীয় সংসদীয় আসন ৩১, গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসন কোন দলের বা জোটের এ নিয়ে দুই উপজেলাবাসীর মনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীতার ভিড়ে কোন দল কোন জোট পাচ্ছে এই আসন এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কার ভাগ্যে জুটবে এই আসনের সোনার হরিণ ক্ষমতাসীন দলসহ অন্যান্য দলের দলীয় মনোনয়নের টিকিট এ নিয়েও আলোচনা সর্বত্র। জোটবদ্ধ নির্বাচনের যুগে আলোচিত ও সমালোচিত গাইবান্ধা-৩ আসনটি কোন দল বা জোট পেলে জয়ী হতে পারবে তা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা ও জল্পনা কল্পনা।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশে বর্তমানে দুটি জোট বিদ্যমান। বাম দল নিয়ে ১৪ দলীয় জোট ও এরশাদের জাতীয় পার্টি নিয়ে মহাজোট। ২০০৮ সালে এ আসনটি মহাজোটের জন্য বরাদ্দকৃত ও ২০১৪ সালে এ আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য বরাদ্দকৃত হলেও কার্যত এ আসনটিতে জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি উভয় দলই এখানে তাদের প্রার্থী দিয়েছিল। ২০০৮ সালে ডা. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী জয় লাভ করেন। তিনি এ আসনে ৬ বারের এমপি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়। স্বতন্ত্র বনাম আওয়ামী লীগ দ্বিমুখী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. ইউনুস আলী সরকার জয়লাভ করেন। এবারের নির্বাচনেও কি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট এই আসন উন্মুক্ত রাখবে না জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচন কবরে তা নিয়ে কৌতুহল।

রাজনীতিক ও সচেতন মহল মনে করেন, আসনটি উন্মুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগকে কাঠখড় পোড়াতে হবে। জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে ডাবল রোল প্লে করে। তাদের রাজনৈতিক চরিত্রও বিচিত্র। কখন কি বলছে তার ঠিক নাই। উপজেলাবাসী মনে করে এরশাদের জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে জোটবদ্ধ ভাবেই নির্বাচন করবে এটা নিশ্চিত। তবে এ আসন উন্মুক্ত থাকবে না এরশাদকে দিয়ে দেওয়া হবে তা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। অনেকেই মনে করেন এবার জাতীয় পার্টি তাদের অস্তিত্বের স্বার্থে বৃহত্তর রংপুরে কম আসনই ছাড় দিবে। বৃহত্তর রংপুর ছাড়া দেশের অন্য কোথাও জাতীয় পার্টির খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা বর্তমান সময়ে নেই। যেটুকু আছে রংপুর অঞ্চলেই। ক্রমেই আঞ্চলিক দলে পরিণত হওয়া জাতীয় পার্টি সেক্ষেত্রে জেলার ৫টি আসনের মধ্যে গাইবান্ধার ৩ ও ১ আসনটি মহাজোটরে শরিকদল জাতীয় পার্টি পাওয়ার সম্ভব্যনা আছে। অপরদিকে, জাতীয় পার্টিকে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগ ছাড়বে না। ছাড়লে তাদের নির্বাচনে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হবে আসনটিতে। এজন্য অনেকেই মনে করছে গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনটি এবার জাতীয় পার্টিকেই দিয়ে দেওয়া হতে পারে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের প্রার্থীরা বর্তমানে দলীয় মনোনয়ন পেতে রাজধানীমুখী হয়ে পড়েছেন।

বিগত ২০০৮ সালে বিএনপি জামায়াত জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করে এ আসনে। ২০০৮ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন হওয়ায় চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী আবু কাওসার নজরুল ইসলাম লেবু নির্বাচন করেন। তিনি নির্বাচনে পরাজিত হলেও পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত ও সাংগঠিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করেন এবং তিনি উপজেলা নির্বাচনে জয় লাভ করে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হন। এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নির্বাচন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। যদিও ২০১৪ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এ নির্বাচনে কৌশলগত কারণে জাতীয় পার্টি নির্বাচন হতে সরে দাঁড়ায় এ কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়। এবার সব দলের অংশ গ্রহণে নির্বাচন হলেও এ আসনটিতে দুটি বড় জোটের মধ্যে মূল লড়াই হবে। এ দিকে আসনটিতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীতার সংখ্যা অধিক হারে বাড়ায় দলের নেতাদের ঐক্যের অভাব দেখা দেওয়ায় জোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভবনা বেশি। এ আসনে জাতীয় পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত এছাড়াও জাতীয় পার্টি যদি দলীয় প্রার্থী মনোনীত করতে ভুল করে তবে ক্ষমতাসীন জোট আসনটি হারাতে পারে।

ক্ষমতাশীন দলের মতোই বর্তমানে বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোট সক্রিয়। ২৩ দলের জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এবারের নির্বাচনও জোটবদ্ধভাবে তারা নির্বাচন করবে এটা নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে এ আসনটি বিএনপি বা জামায়াতকে পাবে তা নিয়ে উপজেলা দুটির জনগণের মধ্যে চলছে জোর আলোচনা। এ আসনের উপজেলাবাসীরা মনে করে যে কোনো দল বা জোট থেকেই যিনিই মনোনয়ন পাক না কেন এ আসনটিতে সকলের সহযোগিতায় অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশের সাথে এ দুটি উপজেলায় নির্বাচন কেন্দ্রিক উৎসব যেন বিরাজ করে। ভোটার যেন তাদের অবাধ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড