• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নরসিংদীতে ভাসমান খাঁচায় মৎস্য চাষে দুই শতাধিক পরিবারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি

  মনিরুজ্জামান, নরসিংদী

০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৩
কর্মসংস্থান

নরসিংদীর মেঘনায় ভাসমান খাঁচায় বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য চাষে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানিতে ভাসমান পদ্ধতিতে চাষকৃত মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে স্বাদ অনেক এবং বেশি দাম পাওয়া দিন দিন এর প্রতি অনেকেরই আগ্রহ বাড়ছে। ফলে ভাসমান পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

তেলাপিয়া, কই, শিং ও পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে এ খাঁচায়। এক একটি তেলাপিয়ার ওজন হয় এক দেড় কেজি। ওজনে বড় হওয়ায় অধিক দাম পেয়ে অনেকের পরিবার এ পেশায় এসে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে।

নদীতে মৎস্য চাষে অপার সম্ভাবনার আশা নিয়ে ২০১০ সাল থেকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদীতে খাঁচায় ভাসমান পদ্ধতিতে মৎস্য চাষের যাত্রা শুরু হয়। উপজেলার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের মেঘনার পাড়ে হাজী কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রথমে মেঘনা নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। তার এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ বেশ লাভজনক হয়ে উঠলে গ্রামের অন্যান্য খামারীরা তার দেখাদেখি এ পদ্ধতিতে মেঘনায় মাছ চাষ শুরু করেন। এখন সরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩৫ জন খামারীর প্রায় তিন হাজার খাঁচা রয়েছে মেঘনায়। তাছাড়া আরো অনেকেই মাছ চাষ করছেন যাদের সরকারীভাবে নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন শতাধিক খামার প্রায় ৭ হাজার খাঁচায় সরাসরি ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। প্রতিদিন এসকল ভাসমান খাঁচা থেকে কয়েক হাজার মেট্রিন টন মাছ বিক্রি হচ্ছে। যা স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে নরসিংদী জেলার অন্যান্য উপজেলার বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে। এ মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে বাড়ে বেশী সেইসাথে স্বাদেও অতুলনীয়। বাজারে পুকুরের মাছের চেয়ে নদীতে চাষের মাছের দাম অনেক বেশী হওয়ায় অনেক পরিবার আর্থিক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

রায়পুরার সফল মৎস্য চাষী মুছা মিয়া বলেন, প্রথমে আমার বাবা কামাল হোসেন এ উপজেলার চর আড়ালিয়ার মেঘনা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। এর পর থেকে আমি বাবার এ পেশাকে ধরে রেখেছি। তার আড়াইশ খাঁচা থেকে সপ্তাহে তিন চারদিন মাছ বিক্রি করতে পারেন। তিন থেকে চার মেট্রিক টন মাছ বিক্রি করে তিনি তার সংসারে সফলতা ফিরিয়ে এনেছেন। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে চাষ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।

ভিকচান মেম্বার বলেন , মছুার বাবার মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে আমি এখন একজন সফল মৎস্য খামারী। আমার মতো আরো শতাধিক খামারী রয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে কলকারখানার দূষিত বর্জ্য সরাসরি নদীর পানির সাথে মিশে পানি দুষণের ফলে অনেক সময় মাছ মরে গিয়ে ভেসে উঠে। ফলে মাছ খামারিদের লোকসানের ঘানি টানতে হয়। নদী দূষণ রোধ করে নদীর স্বাভাবিক নাব্যতা ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

নদীতে ভাসমান মাছ চাষে খামারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে বলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ হাবিব ফরহাদ আলম জানান, যারা নদীতে ভাসমান মাছ চাষ করতে উদ্যোগী হবে তাদেরকেও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতার করা হবে। এদিকে নদী দুষণ ও নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদী দূষণ রোধ করা সহ নদী খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড