জে রাসেল, ফরিদপুর
ফরিদপুর সদরে ৬ বছর বয়সী একটি শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কৃষ্ণনগর গ্রামের বাবলু গাইন (৫০) এর বিরুদ্ধে এ ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত বাবলু গাইন শিশুটির নিকটতম আত্বীয়, সম্পর্কে দাদা হয়। ঘটনার পর থেকে সে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছে।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকা বাবলু গাইন, দেশে ফিরে বাড়ির সামনেই একটি মুদি দোকান দিয়েছে। গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে শিশুটি বাবলু গাইনের বাড়ির সামনে যায়। বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা বাড়িতে না থাকার সুযোগে, পেয়ারা দেওয়ার কথা বলে শিশুটিকে ঘরে নিয়ে যায় বাবলু গাইন। এক পর্যায়ে শিশুটির গোপনাঙ্গে হাত দেয় বাবলু গাইন, ব্যথায় এবং ভয়ে চিৎকার দিলে শিশুটিকে ছেড়ে দেয় সে। শিশুটি দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়িতে গিয়ে তার দাদীকে ঘটনা বলে।
এ বিষয়ে শিশুটির সাথে কথা বললে শিশুটি জানায়, আমারে পিয়ারা দিবার চাইছে, ঘরে নিয়ে গেছে, তার পর হাত দিছে (গোপনাঙ্গে) আমি ভয় পাইয়ে চিল্লেন দিছি, দৌড়ায় চলে আইছি, তারপর দাদীর কাছে কইছি।
শিশুটির দাদী জানান, আমার নাতনী আমার কাছে কওয়ার পরে আমি আমার বউরে ডাক দিয়ে জানাইছি। পুলিশের কাছে যাওয়া হয় নাই তবে যাবো।
শিশুটির মা জানান, আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করছে, মাইরেওতো ফেলাইতে পারতো। আমি এর বিচার চাই, এলাকার মুরব্বীরা আছে তাদেরকে জানাইছি দেখা যাক তারা কি করে।
এক প্রতিবেশী জানান, ৬ বছরের বাচ্চাতো আর মিথ্যা কথা বলবে না, বাচ্চা যা বলছে শুনছি, সেই কথা মুখ দিয়ে বলার মতো মুখতো আর আমাদের নাই।
অভিযোগের বিষয়ে বাবলু গাইনের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি, তবে তার স্ত্রীর কাছে, ঘটনার সত্যতা কতটুকু সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্বামী সবার সাথে একটু বেশী শয়তানী করে, তাই বলে এইগুলা করে নাই।
আর এই বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয়ার জন্য এলাকার একটি পক্ষ উঠে পরে লেগেছে বলে জানা জায়, তারা শিশুটির পরিবারকে ভয় ভীতি দেখিয়ে থানা পুলিশ করতে দেয়নি বরং স্থানীয়ভাবে একটি ঘরোয়া শালিশ বসিয়ে বাবলু গাইনকে ২০ বার কান ধরিয়ে উঠবস করিয়েছে এবং সমাজ থেকে এক ঘরে করে রেখেছে বলে যানা যায়।
এই শালিশের বিষয়ে শিশুটির পরিবারের কাছে ফোন দিলে, তার দাদী মুঠোফোনে জানান, এলাকায় বসবাস করতে হলে সবার কথাই শুনতে হয়, এলাকার যুব সমাজ এর বিচার চাইলেও মুরব্বিরা শালিশ করছে। আমি পুলিশের কাছে যাইতে লাগছিলাম, পরে তারা টের পাইয়ে আমারে নারানপুর বাজার থেকে ফিরাই আনছে। এলাকার লোকজনের বাইরে আমাগো করার কিছুই নাই। তবে এই বিষয়ে যারা শালিশ করছে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে ইউপি সদস্য মোঃ জাহিদ বলেন, এখনো পুলিশকে কিছু জানানো হয় নাই, তারা স্থানীয়ভাবে সমাধান করেছে বলে শুনেছি।
কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ঘটনার সম্পর্কে আমার জানা নেই, তবে ধর্ষণ মার্ডারের মতো বিষয় শালিশ করার মতো ক্ষমতা সাধারণ জনগন বা মেম্বার চেয়ারম্যানদের নাই। বিষয়টি আমি দেখবো ।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন ঢালী জানান, এ বিষয়ে অনলাইনে পরেছি কিন্তু কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে খোজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো। আর উপজেলা প্রশাসন এই পরিবারের পাশে আছে। তাদের যে কোন ধরনের সহযোগীতা আমরা করবো। কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, এটা খুব স্পর্শকাতর একটি বিষয়। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ এখনও পাইনি। ওই পরিবার থেকে অভিযোগ পেলেই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড