স্ত্রীকে হত্যা মামলার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শ্রীঘরে স্বামী

সন্তানাদি না হওয়ায় নির্যাতন করে হত্যার পর অন্যের সাথে পালিয়ে যাওয়ার অপবাদ দিয়ে আসছিলো স্বামী উজ্জ্বল শেখ (৩০)। কিন্তু নিখোঁজের ১৪ দিন পর স্বামীর বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে ঐ গৃহবধূর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ১৯ আগস্ট রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানায় মামলা করেন গৃহবধূর মা সোনা বানু (৫৮)। মামলার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় স্বামী উজ্জ্বল শেখকে ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকা থেকে আটক করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টায় ফরিদপুর র‌্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১০ এর ফরিদপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক লে. কে এম শাইখ আকতার। এ ঘটনায় উজ্জ্বল শেখের মা জহুরা বেগমকে (৪৭) বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে র‌্যাব জানায়।

আটককৃত স্বামী উজ্জ্বল শেখ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার তেঁতুলিয়া গ্রামের কুদ্দুস শেখের পুত্র এবং নিহত গৃহবধূ মিনু বেগম (২৮) একই গ্রামের ছাত্তার শেখের মেয়ে। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোনও হতো। গত ০৫ আগস্ট তাকে হত্যা করে সেফটিক ট্যাংকে ফেলে লাশ গুম করা হয় বলে র‌্যাব জানায়।

একাজে সহযোগিতা করেন উজ্জ্বলের বাবা-মা। মিনুর বাবা ছাত্তার শেখ বলেন, আমার একটাই মেয়ে। মেয়েকে কাছে রাখার জন্য বড় আশা নিয়ে ভাতিজা উজ্জ্বলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু উজ্জ্বল আমার মেয়েকে মেরে ফেললো। আমি এর বিচার চাই।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক জানান, ১২ বছর আগে উজ্জ্বল শেখের সাথে গৃহবধূ মিনু বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের ৯ বছর যাবত তাদের দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান না হওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিলো। এর মধ্যে উজ্জ্বল শেখ গোপনে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানা এলাকায় আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকে সে সেখানে প্রায়ই যাওয়া আসা করতো। এক পর্যায়ে বিষয়টি মিনু ও তার পরিবার জেনে যাওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য আরও বেড়ে যায় এবং তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ হতো। এর জের ধরে উজ্জ্বল মিনু বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

র‌্যাব আরও জানায়, এ ঘটনায় নিখোঁজের নাটক সাজায় স্বামী উজ্জ্বল শেখ। এক পর্যায়ে নিখোঁজের ১৪ দিন পর উজ্জ্বল শেখের বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি ভিকটিমের পরিবার জানতে পেরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সেফটিক ট্যাংকের ভেতর পচা-গলা লাশ খুঁজে পায়। পরে বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। পরবর্তীকালে বালিয়াকান্দি থানায় ভিকটিমের মা সোনা বানু বাদী হয়ে উজ্জ্বল শেখসহ তার বাবা-মাকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।