• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বেতন বন্ধের সুপারিশ

ফিরিয়ে দিতে হবে বেতন-ভাতার সব টাকা

  রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ)

২৮ জুলাই ২০২৩, ১৬:২৮
বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বেতন বন্ধের সুপারিশ

২০০২ সালে এসএসসি ও ২০০৪ সালে এইচএসসি পাস করে রাতারাতি সহকারী শিক্ষক (কৃষি) বনে যান বাবুল হোসেন। এ দিকে সমালোচনার ঝড় থামাতে ২০০৮ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএজিএড কোর্স সম্পন্ন করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।

সনদ ছাড়া ১৮ বছর চাকরি করার বিষয়টি ধরা পড়লেও এখনো বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। ঘটনাটি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ ও আদালতে মামলার কারণে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মনকিউল হাসানাত সম্প্রতি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে সনদ ছাড়াই চাকরি করায় বেতন ভাতার সরকারি অংশ স্থগিতসহ প্রাপ্ত অর্থ ফেরতের সুপারিশ করেছেন।

জানা গেছে, শৈলকুপার মকরমপুর গ্রামের বাবুল হোসেন ২০০২ সালে নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০০৪ সালে জরিপ বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ২০০৫ সালে দৈনিক আজকের কাগজে বিজ্ঞাপন অনুযায়ী একই বছরের ২৫ জানুয়ারি সহকারী কৃষি শিক্ষক পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন তিনি। সনদপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করে ওই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে যোগদান করেন।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হলেও ব্যক্তিগত প্রভাব ও প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় বাবুল হোসেন দাপটের সাথে চাকরি করে যাচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি খন্দকার গোলাম আকবর হ্যাপি ঝিনাইদহের বিজ্ঞ আদালতে বাবুল হোসেনের অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ৪২০/৪০৬/৪৬৫/৪৭১ ধারায় ৫২/২০ নং মামলা দায়ের করেন।

এক পর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক মোহাম্মাদ মনকিউল হাসানাত নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সনদ জালিয়াতির তথ্য পান। এরপর তিনি বেতন ভাতার ১৫ লাখ ৭২ হাজার পাঁচশ ১০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতসহ চলমান বেতন ভাতা স্থগিতের সুপারিশ করেন।

এ দিকে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার পদে নিলুফা ইয়াসমিন ২১-০৯-২০০৩ সালে যোগদান করে ৩৪০০ টাকার স্কেলে এমপিওভুক্ত হন। তার কম্পিউটার সনদটি জাল/ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে। ফলে ২০০১ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত নিলুফা ইয়াসমিনের প্রাপ্ত ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৭ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য বলে শিক্ষা পরিদর্শক মোহাম্মাদ মনকিউল হাসানাত তার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক মুকুল হোসেনের সাথে সহকারী কৃষি শিক্ষকের নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে শিক্ষা পরিদর্শক প্রতিবেদন দাখিল করলেও প্রধান শিক্ষক ব্রডশিটের কিছু তথ্য গোপন করে তা দাখিল করেন। এখন এই জালিয়াতির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সব ধরনের নেপথ্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।

যদিও প্রধান শিক্ষক মুকুল হোসেন জানান, পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ব্রডশিটে জবাব পাঠানো হয়েছে, সেখানে কোন তথ্য গোপন করা হয়নি।

অপর দিকে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, নাগিরাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের সনদ জালিয়াতিসহ প্রতিবেদনে প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করে পূর্ণাঙ্গ ব্রডশিট না দেওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষকের নিকট ফেরত পাঠানো হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড