• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গ্রামবাসীর উদ্যোগে নির্মিত কাঠের সাঁকোর বেহাল দশা

ভোগান্তিতে চার গ্রামের মানুষ

  কাজী শাহরিয়ার রুবেল, আমতলী (বরগুনা)

২৪ জুলাই ২০২৩, ১৭:২৭
গ্রামবাসীর উদ্যোগে নির্মিত কাঠের সাঁকোর বেহাল দশা
গ্রামবাসীর উদ্যোগে নির্মিত কাঠের সেতুর বেহাল দশা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কারও দিকে না তাকিয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে চার গ্রামের সাধারণ মানুষকে। এভাবে পারাপার করা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী স্থানীয়দের দাবি সেখানে একটি নতুন স্থায়ী সেতু নির্মাণের।

সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ বছর বছর পূর্বে স্বেচ্ছাশ্রমে আমতলী সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া সিংখালী নামে খালের ওপর ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যের ওই কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করেছিল ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা। এরপর প্রতি বছরই সাকোটি মেরামত করে পারাপারের জন্য এটি ব্যবহার করছে চারটি গ্রামে বসবাসরত মানুষজন।

যদিও দীর্ঘদিন ব্যবহারে সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। লোকজন উঠলেই সেতুটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। সেতুর উপড়ের রেলিং ও চলাচলের কাঠের পাটাতনসহ বিভিন্ন জায়গায় কাঠ নষ্ট হয়ে ভেঙে পড়েছে। তারপরেও বাধ্য হয়েই ওই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নাচনাপাড়া, সিংখালী, দক্ষিণ আমতলী ও মরিচবুনিয়া গ্রামের সাধারণ মানুষজন।

ওই কাঠের সাঁকোর উত্তর পাড়ে দক্ষিণ পূর্ব আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হুমায়ারা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় আর দক্ষিণ পাড়ে পশ্চিম চিলা সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা ও মরিচবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার অবস্থিত।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন নাচনাপাড়া, সিংখালী, দক্ষিণ আমতলী ও মরিচবুনিয়া গ্রামের অন্তত ৫০০ থেকে ৭০০ লোক ও শিক্ষার্থীদের ওই কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। তাদের দাবি স্থায়ী দুর্ভোগ লাঘবে সরকারিভাবে ওই খালে একটি সেতু নির্মাণের।

দক্ষিণ-পূর্ব আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী আদিবা, নিছা, মুছা, শারমিন, জননী ও ছুমাইয়া বলেন, প্রতিদিন আমাদের ঝুঁকি নিয়ে ওই কাঠের সেতুটি পার হয়ে স্কুলে আসতে ও যেতে হচ্ছে। সেতুটি ভেঙে গেলে আমাদের স্কুলে আসতে যেতে অনেক কষ্ট হবে।

দক্ষিণ আমতলী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের চার গ্রামের সাধারণ মানুষদের ওই খাল দিয়ে পারাপারে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। আমরা গ্রামবাসী একটি কমিটি করে আমাদের নিজেদের উদ্যোগে ২০১৭ সালে এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই খালের উপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করি। সরকারিভাবে স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও আজ পর্যন্ত ওখানে কোনো সেতু নির্মিত হয়নি।

ওই কাঠের সেতু নির্মাণ কাজের উদ্যোক্তা হিরণ মৃধা, আতাহার চৌকিদার, কবির শিকদার ও আবদুল খালেক হাওলাদার বলেন, একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল আমাদের এখানকার চার গ্রামের সাধারণ মানুষ। গত ৬ বছর পূর্বে গ্রামবাসীর অর্থায়নে নাচনাপাড়া সিংখালী খালে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করি। নির্মাণের পর থেকে প্রতিবছর ওই কাঠের সেতু সংস্কার করে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ আমরা গ্রামবাসী পারাপার হয়ে আসছি।

তাদের দাবি, বর্তমানে সেতুটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে কোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পড়ে মারাত্মক কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের দাবি, সরকারি উদ্যোগে এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক।

আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, নিজ উদ্যোগে ওখানকার লোকজন নাচনাপাড়া সিংখালী খালের ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে তার উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে আসছে। ওখানে যাতে একটি স্থায়ী সেতু নির্মিত হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে দ্রুত ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করবো।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে কাঠের সাঁকোর জায়গায় লোহার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড