• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রেমের টানে এবার পাবনায় চলে এলেন মালয়েশিয়ান তরুণী

  রাকিব হাসনাত, পাবনা

১৯ জুলাই ২০২৩, ১১:২৫
প্রেমের টানে এবার পাবনায় চলে এলেন মালয়েশিয়ান তরুণী

পাবনার সুজানগরে রায়হান মণ্ডল নামে এক প্রবাসী যুবকের সঙ্গে প্রেম করে মালয়েশিয়ান তরুণী পাবনায় এসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

নূর সাহিদা নামে ওই তরুণী ও রায়হান মণ্ডল গত রবিবার (১৬ জুলাই) সকালে দুজন এক মাসের ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে পাবনায় আসেন। পরদিন সোমবার (১৭ জুলাই) তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়।

রায়হান মণ্ডল সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে তারাবাড়িয়া গ্রামের নতুনপড়ার আব্দুস সামাদ মণ্ডলের ছেলে। তরুণী মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর শহরের মোহাম্মদ চিমার উদ্দিনের মেয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবারের অভাব-অনটন দূর করতে উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭/৮ শ্রেণিতে অবস্থায় ২০১৬ সালের দিকে মালয়েশিয়াতে যান। সেখানে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি সেখানে একটি নিজস্ব কাপড়ের দোকান দিয়েছেন। মালয়েশিয়া যাওয়ার কয়েক বছর পর দুজনের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর গত ছয় মাস আগে সেখানে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর এক মাসের ছুটি নিয়ে পাবনার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রবিবার সকালে প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। সেখান থেকে পাবনার বাড়িতে আসেন। এরপর সোমবার বিকেলে স্থানীয় কাজী মাধ্যমে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ সম্পন্ন হয়।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ান তরুণী এলাকায় আসার খবরে মঙ্গলবার দিনব্যাপী বাড়িতে ভিড় দেখা গেছে। এ দম্পতিকে দেখতে পাড়া-প্রতিবেশীসহ আশপাশের এলাকার লোকজন অভিনন্দন জানাতে আসছেন। ওই এলাকার উৎসবের আমেজ বইছে।

এ সময় সবুজ হোসেন নামে একজন বলেন, মালয়েশিয়ান মেয়ে বলে কথা, তাও আবার আমাদের এলাকার এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের টানে চলে আসছেন। আমাদের এলাকায় ইদের আমেজ বিরাজ করছে। এক নজর দেখতে শতশত মানুষ বাড়িতে ভিড় করছে। এ জন্য আমরাও দেখতে আসছি। সারাদিন আনন্দ করছি।

সুজানগর শহর থেকে আজিবর নামে এক যুবক আসছেন সেই তরুণীকে দেখার জন্য। তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু অটোরিকশা ভারা করে এদের দুজনকে দেখতে আসছি। খুবই ভালো লাগছে।

মালয়েশিয়ান প্রবাসী রায়হান মণ্ডল বলেন, ৭ বছর আগে আমি পড়াশুনা ছেড়ে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে মালয়েশিয়াতে কাজের জন্য যাই। মালয়েশিয়ায় থাকার সুবাদে কয়েক বছর পর পরিচয় হয় মালয়েশিয়ান তরুণী নুর শাহিদার সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম- ভালোবাসা। আমাদের দীর্ঘ প্রায় তিন বছরের সম্পর্ক। সে নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। পরবর্তীকালে বাংলাদেশে আসার পর গত সোমবার আমার গ্রামের বাড়ি পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়ার তারাবাড়িয়া নতুনপাড়ায় দুই পরিবারের সম্মতিতে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই।

তিনি আরও বলেন, একমাস পর আমরা দুজনই আবার মালয়েশিয়ায় ফিরে যাব। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমরা যেন আজীবন সুখে থাকতে পারি।

নুর শাহিদা বলেন, রায়হান আমাকে ভালোবাসে, আমিও রায়হানকে ভালোবাসি। পরিবারের সবার সম্মতিতে আমরা বিবাহ করেছি। আল্লাহ আমাদের এ বিবাহ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশে আসার পরে দেখি এখানকার মানুষ খুব ভালো। আশা করি এ বাড়ির মানুষও দারুণ হবে।

রায়হানের বোন চম্পা খাতুন বলেন, আমরা ১০ ভাইবোনের সবার ছোট রায়হান। ছোট বেলা থেকে তাকে আদর যত্ন করে মানুষ করেছি। বিদেশে গিয়ে সেখানকার একটি মেয়েকে বিবাহ করছে এটা আমাদের কাছে ভালো লাগছে। আমরা সবাই মিলে আনন্দ উৎসব করছি।

রায়হানের মা অলিমা খাতুন বলেন, মালয়েশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করায় খুব খুশি হয়েছি। যেহেতু মেয়েটি পারিবারিকভাবে সম্ভ্রান্ত মুসলিম বংশের মেয়ে সে জন্য আরও ভালো লাগছে। গত ৬ মাস আগে সেখানে বিয়ে করেছে। আমাদের বাড়িতে আসার পরে ধুমধাম পুনরায় বিবাহ দেওয়া হয়েছে। সবার সঙ্গে মিশে গেছে। আমরা যা খাচ্ছি সেও তাই খাচ্ছে। আমাদের বাড়িতে অনেক মানুষ আসছে। আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো লাগছে।

এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, লোকমুখে শুনেছি মালয়েশিয়া থেকে এক তরুণী এসে আমাদের উপজেলার সাতবাড়িয়াতে একজন যুবকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড