• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শুকনো খাবার-বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে কুড়িগ্রামের লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষ

  হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম

১৬ জুলাই ২০২৩, ১৩:০১
শুকনো খাবার-বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে কুড়িগ্রামের লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষ
জলের তলে কুড়িগ্রামের গ্রামাঞ্চল (ছবি : অধিকার)

কুড়িগ্রামে প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটেনি। বিশেষ করে ধরলা তীরবর্তী মানুষ এখনো ঘরে পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। শনিবার দুধকুমার নদীর পানি সোনাহাট ব্রিজ পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপর দিকে কাউনিয়া ব্রিজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ১৮ এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ৪/৫ দিন ধরে বন্যার পানি অবস্থান করায় পানিবন্দি মানুষ শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে ভুগছে।

এতে দেখা দিয়েছে- গো-খাদ্য ও তীব্র জালানি সঙ্কট। বন্যার কারণে স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব মানুষের প্রয়োজন শুকনো খাবারের।

এ দিকে বন্যায় ৪৫ ইউনিয়নের ১৮৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। এতে নদী ভাঙনের কবলে পরেছে প্রায় দুই হাজার মানুষ।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের উজানে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় তার প্রভাবও পরতে পারে।

কুড়িগ্রাম ত্রাণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রচারিত তথ্যে জানা গেছে, জেলায় ৭৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪৫টি ইউনিয়ন পানিবন্দি হয়ে ১৮৫টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে নদী ভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬২ হাজার ৮৮০ জন মানুষ। এছাড়াও ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ও ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

শুকনো খাবার-বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে কুড়িগ্রামের লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষ

জলের তলে গ্রাম (ছবি : অধিকার)

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের নন্দ দুলালের ভিটার কছিরন, সাহাব আলী ও আইনুল জানান, এখানে দেড়শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। গতকাল ডিসি স্যার ইউএনও স্যার একশ জনকে শুকনো খাবার দিয়েছেন। বাকিরা না পেয়ে হতাশ।

সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের গাড়িয়ালপাড়া ও মুন্সিপাড়া গ্রামের মহব্বত আলী ও সেকেন্দার জানান, বন্যায় গত ৫/৬ দিন ধরে পটলক্ষেত, পাটক্ষেত, বীজতলা ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। যোগাযোগর রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।

হযরত আলী বলেন, পানি ঘরে ঢুকে পড়ায় খাট তলিয়ে গেছে। রান্নার চুলা পানির নিচে। ঘরে চাল থাকলেও আগুন জ্বালানোর কোনো উপায় নেই। ফলে উপোষ করতে হচ্ছে। প্রয়োজন শুকনো খাবার। কিন্তু ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার উপায় নেই। একই অবস্থা বিরাজ করছে বন্যাদুর্গত এলাকায়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেছেন, প্লাবিত অধিবাসীদের সহযোগিতা করতে সদাশয় সরকারের কাছ থেকে ৬৫০ মেট্রিকটন চাল, ১০ লক্ষ নগদ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবার বরাদ্দ পেয়েছি। তার মধ্যে আমরা ২৭৫ মেট্রিকটন চাল, ৯ লাখ টাকা ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। এর বাইরেও বিভিন্ন সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। আমাদের ৩৬১টি অস্থায়ী এবং ১৮টি স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও বানভাসিদের উদ্ধারের জন্য আমাদের ৪টি রেসকিউ বোটসহ ২৭৫টি শ্যালো নৌকা প্রস্তুত রয়েছে। আমরা যে কোনো ধরণের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড