• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভিডিয়ো ফাঁস 

পরীক্ষার কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছিলেন শিক্ষকরা 

  মো. আবুবকর মিল্টন, বাউফল (পটুয়াখালী)

১৮ জুন ২০২৩, ১৩:০০
পরীক্ষার কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছিলেন শিক্ষকরা 

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মার্কস বেশি দেয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপে ফেলে অর্থ আদায় করার একটি ভিডিয়ো এবং শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে শিক্ষকদের অর্থ আদায় করার প্রমাণ হিসেবে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছিয়েছে। গত রবিবার (২৮ মে) শেষ পরীক্ষার দিন এ ঘটনা ঘটে।

ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যায়, পরীক্ষা কেন্দ্রের কক্ষে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে একজন শিক্ষক টাকা তুলছেন অন্য দিকে আরেক শিক্ষক পাশে দাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে ইশারা করে টাকা দিতে বলছেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা লেখা বাদ দিয়ে শিক্ষকদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।

প্রকাশিত সেই ভিডিয়ো বিশ্লেষণ করে ঘটনার সত্যতা পেতে এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়, ওই পরীক্ষা কেন্দ্রটি ছিল উপজেলার নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সেখানে একই উপজেলার মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার খাতা লিখছিলেন।

আর অর্থ উত্তোলনকারী ওই শিক্ষকরা হলেন- উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ফারুক স্যার এবং বঙ্কিম স্যার আমাদের কাছ থেকে পরীক্ষার হলে বসে প্রাক্টিকাল পরীক্ষায় বেশি মার্কস দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। প্রথমে আমরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বলেন, তোমরা টাকা না দিলে পর্যাপ্ত মার্কস পাবে না। তাই আমরা প্রত্যেকে ২০০-৩০০ (দুইশ থেকে তিনশো) টাকা করে দিতে বাধ্য হয়েছি।

অভিযুক্ত শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র ও ফারুক হোসেন বলেছেন, আমরা ছাত্রদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছি। টাকাটা উঠিয়ে নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা কেন্দ্রে হল সুপারের দায়িত্বে থাকা জুলহাস স্যারকে দিয়েছি। সর্বমোট ১০০ জনের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তবে, এই সব কাজ আমাদের প্রধান শিক্ষক মিলন স্যারকে জানিয়েই করেছি।

এ দিকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বক্তব্যকে অস্বীকার করে মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিলন মিয়া বলেন, টাকা-পয়সা উঠানোর বিষয়ে আমি পরে শুনেছি। এ বিষয়ে আমাকে অবগত করে কিছু করা হয়নি।

নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (ওই পরীক্ষায় দায়িত্বে থাকা হল সুপার) মো. জুলহাস জানান, আমাদের কাছে কেউ কোনো টাকা দেয়নি এবং আমি এ বিষয়ে কিছু জানিও না।

তিনি আরও বলেন, মার্কস বেশি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়া বা হলের ভিতরে টাকা তোলা আইন বহির্ভূত। এ রকম হয়ে থাকলে আসলেই দুঃখজনক বিষয়।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহা. মুজিবুর রহমান জানান; বিষয়টি শুনলাম এবং ভিডিয়ো ফুটেজ দেখলাম, এটি খুবই দুঃখজনক। যেখানে হলে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ডাক দিয়ে কথা বলা নিষেধ, সেখানে টাকা উঠানোর কোনো সুযোগ নেই।

সাংবাদিকের অন্যত্র প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা অফিসার আরও জানান, ছাত্রদের প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষায় মার্কস বেশি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে তিনদিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়েছি। এর পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড