• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এবার পাহাড়ি অঞ্চলে আমের বাম্পার ফলন

  এম. কামাল উদ্দিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার (রাঙামাটি)

১২ মে ২০২৩, ১১:১৯
এবার পাহাড়ি অঞ্চলে আমের বাম্পার ফলন
আমের বাম্পার ফলন (ছবি : অধিকার)

রাঙামাটির পাহাড়েও এবার মৌসুমি আমের বাম্পার ফলন দেখা দিয়েছে। এতে চাষিদের মুখে ফুটেছে হাসি। মৌসুম শুরুর দিকে সম্প্রতি ঝড়ে মুকুল ও কচি ফল ঝরে না গেলে আরও বিস্তর ফলন পাওয়া যেত।

এরপরও কয়েক দিনের মধ্যে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হলে মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন বলে জানান, কৃষকরা। তারা জানান- আমের বাম্পার ফলন দেখা দিলেও এখনো পাকেনি। তাই সব জাতের আম বাজারে আসেনি। ইতোমধ্যে দেশি জাতের আম বাজারে এলেও সেগুলো স্বাদে টক এবং পোকায় আক্রান্ত। আম্রপালি, রাংগুয়াই, রুপালি আম বাজারে আসতে আরও সপ্তাহ খানেক বা তার অধিক সময় লাগতে পারে। এসব জাতের আম টসটসে রসালো এবং স্বাদে খুব মিষ্টি। তাই দামও অধিক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, সদরসহ জেলার প্রায় উপজেলায় আমের বিস্তর চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতি বছর ফলনও আসে প্রচুর। উপযুক্ত আবহাওয়া এবং আধুনিক ও উন্নত চাষাবাদের ফলে জেলায় আমের ফলন বিপুল হয়ে আসছে।

কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বিপুল ফলনে কৃষকরা খুশি। অন্য লোকজনের মাঝে ব্যাপকহারে আমের চাষাবাদে উৎসাহ বেড়ে চলেছে। আমের চাষাবাদে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন জেলার উল্লেযোগ্য সংখ্যক জনগোষ্ঠী। জেলায় এবার ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাষাবাদও হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি হেক্টরে ১২ টন। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। এখন বাজারে আসছে দেশি জাতের আম। আম্রপালি, রুপালি, ফজলি, ল্যাংড়া, রাঙ্গুয়াই জাতের আম এখনও পাকেনি।

বৃহস্পতিবার রাঙামাটি সদরের মগবান ইউনিয়নের লেমুছড়ি এলাকায় একটি আম্রপালি আমের বাগান গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে প্রচুর আম। আমের ভারে নুয়ে পড়েছে প্রায় গাছের ডাল। তবে আমগুলো এখনো কাঁচা।

বিক্রিতে আরও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে জানান, বাগানের চৌকিদার বিজয়গিরি চাকমা। তিনি জানান, বাগানটির মালিক অমর জ্যোতি চাকমা রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির বাসিন্দা। তার বাগানে প্রায় দুই শতাধিক আম্রপালি গাছ লাগানো হয়েছে। এবার প্রতিটি গাছ থেকে অন্ত ৬০-৭০ কেজি আম বিক্রি করা যাবে।

পাশের আরেক আমবাগানের মালিক জেকসন চাকমার বাগানেও প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে প্রচুর আম। তিনি জানান, তার স্বল্পজমি। তাই মাত্র ৩০-৩৪টির মতো গাছ লাগিয়ে তার আম্রপালি আমের বাগানটি করেছেন।

গত বছর প্রতি গাছ থেকে ৫০-৬০ কেজি আম বিক্রি করেছেন। প্রতি মৌসুমে শুরুর দিকে আমের ভালো দাম পাওয়া যায়। এ সময় প্রতি কেজি আম ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি করা যায়। পরে কেজি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়। এবার প্রতি গাছ থেকে ৭০-৮০ কেজি আম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষক জেকসন। তবে এর কিছু দিনের মধ্যে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হলে মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটির উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিন চাকমা বলেন, এ জেলায় গত বছরের চেয়ে এবার মৌসুমে আমের ফলন প্রচুর- যা বাম্পার ফলন বলা যায়। জেলায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমের চাষাবাদ হয়েছে। তবে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। বিপুল ফলনে আমের চাষাবাদে ব্যাপকহারে মানুষ উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে। জেলার প্রতিটি উপজেলায় কমবেশি আমের চাষাবাদ হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ফলন হয় রাঙামাটি সদর, লংগদু, বাঘাইছড়ি উপজেলায়। আর অধিক ফলনের কারণে জেলায় এখন সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে রাংগুয়াই ও আম্রপালি জাতের আম।

রাঙামাটিতে কোন আম কবে বাজারে আসবে তার তালিকা:

দেশি আম- বর্তমানে।

আম্রপালি আম- চলতি মে মাসের মাঝামাঝি।

রাংগুয়াই ও ল্যাংড়া আম- চলতি মে মাসের শেষের দিকে।

রুপালি আম- জুনের প্রথম।

রাজশাহী ফজলি- জুনের মাঝামাঝি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড