কাজী শাহরিয়ার রুবেল, আমতলী (বরগুনা)
বরগুনার আমতলীতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাওঘা নুর আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ প্রধান শিক্ষকের নাম সামসুল আলম। তার বিরুদ্ধে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগী জিয়াউল হক বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।
আদালতের বিচারক মো. আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিককে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ সোমবার (১লা মে) ইউপি চেয়ারম্যান এ মামলার তদন্তের দিন ধার্য করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আরও ৬/৭ জনের কাছ থেকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এছাড়াও তিনি তার অনিয়ম এড়াতে বিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি গঠন না করে এডহক কমিটি গঠন করেছেন। সাবেক হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সহিদুল ইসলাম মৃধা ও তার স্ত্রী মোসা. শিমুল ইসলামকে পর্যায়ক্রমে এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন। পাশাপাশি তিনি ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না এবং ক্লাসও নেন না বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জাতীয় দিবসগুলোও পালন করা হয় না। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান পর্যন্ত পালন করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন প্রধান শিক্ষক। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে সরকারি বেতন ছাড়াও প্রত্যেক মাসে বিদ্যালয় তহবিল থেকে ছয় হাজার টাকা অতিরিক্ত সম্মানী নেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেছে। ধর্মের পোশাকে প্রতিনিয়ত করছেন দুর্নীতি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের দিকে লক্ষ না রেখে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। স্বনামধন্য এ বিদ্যাপিঠের শিক্ষার মান অটুট রাখতে তার অনিয়মের তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে পূর্ণাঙ্গ মানেজিং কমিটি গঠন করতে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জিয়াউল হক বলেন, আমার বাবা মরহুম আফসার উদ্দিন মাস্টার এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। আমাদের জন্য বাবা কখনো না ভেবে সমাজের মানুষের কথা ভাবতেন। তিনি অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোকিত করতে সর্বত্র চেষ্টা করেছেন। শুধু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নয় তিনি জমি দাতাও। এতকিছুর পরেও আমি একটা চাকরির জন্য তার পিছু পিছু অনেক ঘুরেছি। একপর্যায়ে সে আমাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তিন লক্ষ টাকা ঘুষ নেয়। কিন্তু চাকরি তো দিচ্ছেন না বরং টাকা নিয়েও ঘুরাচ্ছেন। এজন্য নিরুপায় হয়ে আমি আদালতে মামলা করেছি।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম জানান, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আমি কোন টাকা আত্মসাৎ করিনি। আর এডহক কমিটির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কিছুই বলতে পারবো না। ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ কে? এমন প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দেননি।
এ বিষয়ে এডহক কমিটির সভাপতি মোসা. শিমুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কোনো টাকা নেওয়ার তথ্য আমি জানি না। এসব তথ্য মিথ্যা বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে বারবার এডহক কমিটির সভাপতি আপনারা স্বামী-স্ত্রী কেন? এমন প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জিয়াউল হক বলেন, এডহক কমিটি গঠনের ক্ষমতা বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের, আমার নয়। আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষক না আসার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড