• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এক আমগাছেই সাড়ে তিনশ মন আম ধরার সম্ভাবনা

  মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও

০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:২৯
এক আমগাছেই সাড়ে তিনশ মন আম ধরার সম্ভাবনা
এশিয়ার বৃহত্তম প্রাচীন সূর্যপুরী জাতের আমগাছ (ছবি : অধিকার)

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম প্রাচীন সূর্যপুরী জাতের আমগাছটিতে এবার এই তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ মন আম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই আমগাছটি দূর থেকে প্রথম দেখাতেই যে কেউ মনে করবে এটি যেন বটগাছ? না হয় এমন ধরণের কোনো গাছ হবে। তবে কাছে গেলে দেখা যায় এটি একটি বিশাল আকৃতির সূর্যপুরী আমগাছ।

অসংখ্য ইতিহাসের নীরব সাক্ষী প্রাক ঐতিহাসিক যুগের প্রাচীন এই সূর্যপুরী আম গাছ। উত্তরের শান্ত জনপদের নীরব সাক্ষী এই গাছটির ডালপালার দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ ফিট। গাছটির বয়স কত তা ঠিক করে বলতে পারছেন না কেউ। তবে এলাকার বেশির ভাগ মানুষ এক মত যে প্রায় ২২০ বছরের কম নয়।

এই বৃহত্তম সূর্যপুরী আম গাছটির অবস্থান, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের হরিণমারী সীমান্তে মন্ডুমালা গ্রামে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিজ চোখে আমগাছটি দেখার জন্য প্রতিদিন ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। গাছকে দেখেই ডালের উপরে ওঠে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ছবি তুলছেন তারা। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ দর্শনার্থীরাও গাছের ডালের উপরে উঠে ছবি তুলে মনের স্বাদ মিটানোর চেষ্টা করছেন।

আরও জানা যায়, স্থানীয় সৈনিক মো. সাইদুর মোল্লা ও নূর ইসলাম পূর্বপুরুষের লাগানো এ গাছটির মালিকানা তারা পৈত্রিক সূত্রে পেয়েছেন। প্রাচীন এই আমগাছটির দর্শনী বাবদ বিশ টাকা নেওয়া হয়। প্রতি বছরের মত এবার সাইদুর রহমান নামে একজন গাছের আমগুলো ৫০ হাজার টাকা দিয়ে লিজ নিয়েছেন এক বছরের জন্য।

রংপুর থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এই আমগাছটির সম্পর্কে বহুদিন ধরে শুনেছি দুই বিঘা জমি জুড়ে একটি আমগাছ রয়েছে। কিন্তু তা চোখে দেখা হয়নি। এখন সরাসরি দেখতে পেরে মুগ্ধ হলাম। তবে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত বলে আমি মনে করি। অনেক জনে শিশুসহ, মহিলারাও গাছের উপরে উঠছে এতে করে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, একটি আমগাছ যে এত বড় হতে পারে সেটি চিন্তার বাইরে। অনেকে এই গাছটি দেখে মনে করবে এটি একটি কৃত্রিম গাছ। আসলে তা নয় এটা একটি প্রাকৃতিক গাছ অনেকেই আসে গাছটিতে দেখতে তেমনি আমিও পরিবারকে নিয়ে এসেছি।

রাজশাহী থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, গাছটি এক নজর দেখতে দুর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং বিদেশ থেকেও অনেক দর্শনার্থীরা। এই বৃহত্তম আম গাছটির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে। গাছটির আশপাশ যদি সাজিয়ে তোলা হতো তাহলে দর্শনার্থীরা জায়গাটি আরও উপভোগ করতে পারত। সেই সাথে যদি, এখানে একটি ভাল রেস্ট হাউজ, ভাল মানের রেস্টুরেন্ট এবং একটি মানসম্মত ওয়াশরুম স্থাপন করা জরুরী। এতে করে দর্শনার্থীরা উপকৃত হবে।

গাছের মালিকের মধ্যে একজন সৈনিক মো. সাইদুর মোল্লা বলেন, অন্যান্য বছরের মত এবারেও আমের ভাল ফলন এসেছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে ৩০০ থেকে ৩৫০ মন আম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ গাছকে দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা আসে। কিছুটা সরকারী সহযোগিতা পেয়েছি। আরও সহযোগিতা পেলে একটি ভাল পরিবেশের ব্যবস্থা করা যাবে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন আমগাছটি দেখতে। এই আমগাছটিকে ঘিরে ছোট-খাট পর্যটন গড়ে উঠেছে। যাওয়ার রাস্তা একটু ছোট হওয়ায় দুই সাইডে তিন ফুট করে বড় করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এটি ট্রেন্ডারধীন রয়েছে।

এ দিকে উপজেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন ফান্ড থেকে গেস্ট হাউজ, মসজিদসহ অন্যান্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরেকটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি এই জায়গাকে ঘিরে একটি পার্কের ব্যবস্থা করার জন্য। পরিকল্পনামন্ত্রী দৃষ্টি কামনা করছি মিডিয়ার মাধ্যমে যাতে এ জায়গাকে ঘিরে কোনো ব্যবস্থা করে দেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড