• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ঢাকা বিভাগের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ প্রকল্প

  আব্দুর রউফ রুবেল, গাজীপুর

২২ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৪
উদ্বোধনের অপেক্ষায় ঢাকা বিভাগের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ প্রকল্প
শ্রীপুরের নয়াপাড়া গ্রামে আধুনিক সুবিধাসহ গড়ে উঠা আশ্রয়ণের মডেল গ্রাম (ছবি : অধিকার)

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ঢাকা বিভাগের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ প্রকল্প ৮ একর ৯০ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে ১৪২টি ঘর। ১৪২টি পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে। ১৪২টি ঘর ছাড়াও প্রকল্পে ঠাই পেয়েছে স্কুল, মসজিদ, খেলার মাঠ এবং সুপেয় পানির সুব্যবস্থা।

আজ বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন এবং গাজীপুর জেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই পাওয়া নায়েবালী এলাকার হোসেন মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম (৫০) বলেন, আমি অনেক অনেক খুশি হয়েছি। নিজের ঘরে থাকতে পারবো। আগে অন্যর বাড়িতে রায়ত থাকতাম। আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘ হায়াত দেউক। তিনি যেন অসহায়দের পাশে সবসময় থাকতে পারে।

শ্রীপুরের কাওরাইদ রেল স্টেশনে রাতে আশ্রয় নিতো বৃদ্ধ হামিদা বেগম (৬০)। তিনি বলেন, ইস্টিসনে মশা, মাছি ও দুর্গন্ধ নিয়ে ঘুমাতে হতো। হাছিনা আফা (প্রধানমন্ত্রী) আমাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আম অনেক সুখে আছি। দোয়া করি আল্লাহ শেখ হাছিনা আফারেও সুখে রাখবে।

আমীর আলী (৫০) বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে বনের ভিতর কোনো রকমে ঘর তুলে বসবাস করতেন। মাঝে মাঝে বন বিভাগের লোকদের ভয়ে ঘর ছেড়ে চলেও যেতে হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে ঘর ভিজে যেতো। শীতে কষ্ট করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে এখন আর কষ্ট করতে হবে না। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখেই দিন কাটাতে পারবো।

শ্রীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে এম মোহিতুল ইসলাম জানান, এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, দিনমজুর, বয়স্কসহ ১৪২টি গৃহহীন পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রতিটি ঘর তৈরিতে সরকারীভাবে ব্যয় হয়েছে দুই লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম জানান, প্রতিটি ঘরে দুটি বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট রয়েছে। ওইসব ঘরে পৃথক মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। খুবই স্বচ্ছতার সাথে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান জানান, এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের অভ্যন্তরে উপহারের ১৪২টি ঘর ছাড়াও রয়েছে স্কুল, মসজিদ, খেলার মাঠ, সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের সুব্যবস্থা। তার মধ্যে ১টি পুকুর, ১টি সুপরিসর মসজিদ, ১টি বিদ্যালয় কাম-স্টাডি সেন্টার, ১টি কমিউনিটি সেন্টার কাম দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র, ১টি কবরস্থান, প্রকল্পের অভ্যন্তরে প্রশস্ত সড়ক, সৌরচালিত সড়কবাতি নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়াও পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি, ফলদ, বনজ গাছ সমৃদ্ধ বাগান এবং কৃষি বিভাগ কর্তৃক পারিবারিক পুষ্টি বাগান সৃষ্টির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা বলতে পারছি গ্রামের ভেতর পূর্ণাঙ্গ এক শহর গড়ে উঠছে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটির মাধ্যমে।

তিনটি ধাপে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ প্রকল্পসহ গাজীপুরে “ক” শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত এক হাজার ৮১৭ টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ পাকা ঘর দেয়া হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলায় মোট এক হাজার ৮১৭টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৩০টি, শ্রীপুরে ২৮০টি, কাপাসিয়ায় ৩১৮টি, কালিয়াকৈরে ৪৪০টি এবং কালীগঞ্জে ১৪৯টি।

আশ্রয়ণে স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে তাদের চোখে মুখে আনন্দের বন্যা। সকাল হলেই সন্তানদের পাঠাচ্ছেন স্কুলে। নিশ্চিন্ত মনে কাজ করছেন। সরকারের উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর থেকে নিচ্ছেন নানা ধরনের কর্মসংস্থানের প্রশিক্ষণ। জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকির ফলে এগিয়ে যাচ্ছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের দরিদ্র ও আশ্রয়হীন বাসিন্দারা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড