মো. আকাশ, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কের যানজট যেন নগরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হচ্ছে।
রাজধানীর সন্নিকটস্থ নারায়ণগঞ্জ জেলায় বর্তমানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পরিণত হয়েছে এটি। যতদিন যাচ্ছে এ সড়কে ততই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মিশুক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, ট্যাংকলরী, যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার ও কাভার্ডভ্যানসহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল বেড়ে চলেছে। ফলে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। যানজটে নাকাল অবস্থা হলেও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কটির পাশে রয়েছে আদমজী ইপিজেড, র্যাব-১১ এর সদর দপ্তর, ডিপিডিসির কার্যালয়, সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, পদ্মা ও মেঘনা ডিপোসহ অসংখ্য পোশাক কারখানা ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এরিয়ায় দুই লক্ষ ৫৬ হাজার জনসংখ্যা দেখালেও এখানে তার চেয়ে অধিক বেশি জনসংখ্যার বসবাস। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে পরিচিত আদমজী ইপিজেডের ভিতর বর্তমানে অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক ও কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছে। পাশাপাশি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এরিয়া স্কুল-কলেজ রয়েছে অসংখ্য। ফলে যানবাহনের চাপের পাশাপাশি মানুষের অত্যধিক চাপের কারণে দুই লেনের সড়কটি এখন ‘যানজটের সড়কে’ পরিণত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ কলেজছাত্রী সানজিদা আক্তার সোভা বলেন, প্রতিদিন সকালে এ সড়কে অনেক যানজট থাকে। ফলে আমরা সময় মতো কলেজে পৌঁছাতে পারি না। শুধু সকালেই সীমাবদ্ধ নয় বিকেলে পড়তে যাওয়ার সময়ও আমরা বিকল্প হিসেবে পাশের বাইপাস রাস্তা দিয়ে রিকশা করে যাই।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহআলম বলছেন, যানজটের কারণে আমাদের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে অনেক সময় লেগে যায়। এর ফলে আমাদের সময়ের অপচয় হচ্ছে। মানুষজন অসুস্থ চিকিৎসার জন্য জরুরিভাবে তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। এখানকার সড়কটিকে চলাচলরত গাড়ির চাপ কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ট্যাংকলরী চালক আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের ডিপোর গাড়ি চলাচলের একমাত্র সমস্যা হয়েছে দাঁড়িয়েছে অসংখ্য অটো রিকশা ও ইজি বাইক। মাঝেমধ্যে মনে হয় যাত্রীর চেয়ে এখানে গাড়ির সংখ্যাই বেশি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী পরিচালক শাহানা ফেরদৌস জানান, নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাল সড়কে মূলত যানজট সৃষ্টি হয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কোনো ডিসিপ্লিন না থাকার কারণে। গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট দিনদিন বাড়ছে। পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বেশি সমস্যা হচ্ছে।
বিকল্প হিসেবে কিছু করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা চেষ্টা করেছিলাম সড়কটি চওড়া করার। তবে জায়গায় না থাকায় সেটি করা সম্ভব হয়নি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ডিএনডি লেকের খাল থেকে আমরা কিছু অংশ জায়গা নেওয়ার জন্য কথা বলেছিলাম। তবে তাদের পক্ষে খাল কেটে দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় সড়কটি চওড়া করতে পারিনি। তবে আগামী বছর আমরা এ সড়কটি চওড়া করার কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেছেন, যানজট একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটা সবসময় ছিল। এটি স্বাভাবিকভাবে থাকে। সে লক্ষ্যে আমরা জেলা পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি এবং যারা কমিউনিটিং পুলিশিংয়ে রয়েছে তাদের আমরা ব্যবহার করতেছি।
তিনি আরও বলেন, সবাই মিলে কাজ করলে এ সমস্যাটা থাকবে না বলে আমি মনে করি। মূলত দুইটা সময়ে যানজটটি সৃষ্টি হতে দেখা যায় গার্মেন্টসে যখন কার্যক্রম চালু হয় এবং ছুটির পর। এ দুই সময়ে যেন সমস্যা যেন না হয় সে জন্য আমরা কাজ করতেছি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড