• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মানপত্র আনতে দেরি হওয়ায় সহকারী শিক্ষক পেটালেন প্রধান শিক্ষককে

  সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৪৫
মানপত্র

রবিবার ছিল সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের অবসর জনিত বিদায় অনুষ্ঠান। আর বিদায় অনুষ্ঠানের মানপত্র আনতে দেরি হওয়ায় ক্ষুদ্ধ ওই শিক্ষক ও তাঁর দুই ছেলে মিলে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক (৪৬) কে।

রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার তালম ইউনিয়নের জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চত্ত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি তিনি ন্যাক্কার জনক এ ঘটনার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন।

আহত প্রধান শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক জানান, তাঁরই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের অবসর জনিত বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য তিনি সকল আয়োজন সম্পন্ন করেন। কিন্তু বিদায়ী শিক্ষককে দেবার জন্য মানপত্রটি প্রস্তুত না থাকায় তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন কে নিয়ে উপজেলা সদরে আসেন। পরে সেখানে থেকে মানপত্রটি সংগ্রহ করে দুপুর ১২ টার দিকে বিদ্যালয়ে পৌঁছান।

এ সময় বিদায়ী সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীন মানপত্র আনতে কেন দেরি হলো এ কথা বলেই প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে গালাগাল দিয়ে মারপিট শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি সেখানে থাকা তাঁর দুই ছেলে গোলাম মোস্তফা (৩৬), মনিরুজ্জামান (৩২) ও তাঁর এক ভাতিজাকে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক কে পেটানোর জন্য নির্দেশ দেন।

আর নির্দেশ পেয়েই তারা লোহার রড, লাঠি নিয়ে প্রধান শিক্ষককের ওপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এক সময় তিনি ওই প্রধান শিক্ষক রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তা দেখে উপস্থিত ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবকরা কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে পড়েন। পাশাপাশি তাঁরা দৌড়াদৌড়ি ও কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। পরে উপস্থিত লোকজন সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীন ও তাঁর স্বজনদের কাছ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক কে উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সিরাজগঞ্জর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আর চলে যাওয়ার সময় পেটানোর সাথে জড়িতরা আহত প্রধান শিক্ষক কে নানা হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন আহত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক। তবে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

বিষয়টির সম্পর্কে জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন জানান, চোখের সামনে যা ঘটেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা একজন শিক্ষক কে প্রকাশ্যে পেটানোর সাথে জড়িত শিক্ষক জয়নুল আবেদীন ও তাঁর ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। প্রধান শিক্ষককে পেটানোর বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন বলেন, আহত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আমার অফিসে এসেছিলেন। তাঁকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। আর অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাড়াশ থানার পুলিশ পরির্দশক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আহত শিক্ষক থানায় এসেছিলেন। উনাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আহত শিক্ষক অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড