• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

লিজ নেওয়া জমিতে তরমুজ চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা

  মো. আবুবকর মিল্টন, বাউফল (পটুয়াখালী)

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৫৩
লিজ নেওয়া জমিতে তরমুজ চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষরা

তরমুজ একটি রসালো মৌসুমি ফল। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চাষ হলেও লোহালিয়া নদী বেষ্টিত, বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের চরে এর নতুন করে চলছে তরমুজ চাষ। ফুল-ফলে ভরে গেছে কৃষকের স্বপ্নের ক্ষেত। এখনই সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দিচ্ছে তরমুজ। চৈত্রের তৃপ্ত রোদে দিনের বেশিরভাগ সময় চাষিরা পার করছেন ক্ষেত পরিচর্যা।

কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের তথ্য মতে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর বাউফলে সবচেয়ে বেশি তরমুজের আবাদ হচ্ছে। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন বেলে মাটি ও বেশি পরিমাণের মিঠা পানির প্রয়োজন হয় এ ফলের ফলন ভালো করতে। নদী তীরবর্তী এ উপজেলায় চরের সংখ্যাও বেশি। যার ফলে চরগুলোর পাশে নদী থাকায় পানি সেচ ব্যবস্থা খুব সহজ।আর এজন্যই তরমুজ চাষিদের বেশি পছন্দ নদী তীরবর্তী চরগুলো।

চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে। গতবছর বছর প্রায় ১৫শ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।

গত কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন কৃষক। তাই অপার সম্ভাবনাময় এই ফল চাষে কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। জেলার স্থায়ী কৃষক ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলা যেমন, ভোলা, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ অন্যান্য জেলার চাষিরাও তরমুজ চষের জন্য বাউফলের চর গুলোকেই বেঁছে নিয়েছেন।

চলতি বছর তার ব্যতিক্রম হয়নি। জমি লিজ নিয়ে তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন চাষি। এবার বর্ষার শেষেই প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তরমুজ চাষের উদ্দেশ্য বাসা বেঁধে তরমুজ চাষ শুরু করছে অনেক কৃষক। বর্ষার সময় তলিয়ে থাকা চরগুলোতেই বেড়ি বাদ করে হাজার-হাজার একর জমি চাষ করা হচ্ছে তরমুজ।

পটুয়াখালী কমলাপুর ইউনিয়ন থেকে বগা ইউনিয়নের বামনীকাঠীর চরে কৃষক জিয়াউর রহমান সহ এসেছেন নতুন পুরাণ ৮/১০ জন কৃষক। এদিকে ভিনদেশীদের এমন সাফল্য দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এ উপজেলার চাষিরাও। ঝুঁকছেন উপজেলার বিভিন্ন পেশার মানুষ।

উপজেলার বগা, বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপসহ কালাইয়া, নুরাইনপুর, নিমদি শৌলা ও ধুলিয়সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষিরাও এখন তরমুজ আবাদ করছেন।

এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকসহ সবাই বেশ উচ্ছ্বসিত। পটুয়াখালী থেকে আসা যুব কৃষক নেছার (২৩) বলেন, আমি অনেক বছর ধরে বড় দের লগে এই ফলের চাষ করে আসছি, আলহামদুলিল্লাহ বেশ লাভবান ও হয়েছি। আগে তো আমি আমাগো ইউনিয়নের পুরাতন কৃষক যারা ছিল তাদের লগে তরমুজ খেতে কাজ করতাম। এখন আমরা পাঁচজন মিলে বামনীকাঠীর অনাবাদী চর লিজ নিয়ে চাষ করতেছি। আশা করি ভালো কিছু হবে।

কৃষক মোহাম্মাদ মৃধা (৫৬) বলেন, বাহিরে থেকে লোক আমাগো এলাকায় আইয়া যদি হেরা তরমুজ চাষ করতে পারে। তাহলে আমরা কেনো পারব না। এ জন্য আমি ও দুই করা জমিতে তরমুজ চাষ করতেছি। খুব ভালো হইছে।

এলাকার বাসিন্দা মমিন হাওলাদার (৩৫) বলেন, শীতকালীন এই ফল দিন দিন মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে এবং এই ফল চাষ করে সফলতাও পাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন চর ও ফসলি জমিতে চাষ করা হচ্ছে তরমুজ। এতে সাধারণ মানুষের কাজের চাহিদা বাড়ছে এবং হতদরিদ্র মানুষের কাজের সুযোগ ও পেশার পরিবর্তন হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বামনীকাঠী চর অনাবাদি হয়ে পরে ছিল, দেশি-বিদেশি কৃষকের লিজ নিয়ে তরমুজ চাষ করতেছে। এমন আগ্রহে লাভবান হবে আগামী প্রজন্মের কৃষক।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, আমরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছি। তরমুজ চাষের উপর ইতিমধ্যে আমরা ১০টি প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ভাল ফলনের কারণে প্রতি বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে তরমুজ। আশা করছি এ বছরও ভাল ফলন হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড