ইউপি সদস্যের লালসা থেকে রেহাই পেল না জমির ফসল

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় প্রকাশ্য দিবালোকে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় জোর করে জমি দখল করে ফসল নষ্ট ও গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। দখল করে জমিতে লাল নিশানাও টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের খামার কোদালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আমিরুল ইসলাম চাঁদভা ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের মেম্বার।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮২ সালে খামার কোদালিয়া গ্রামের রজব আলী শেখ একই এলাকার পরিজান বেওয়া ও মতিজান বেওয়ার সঙ্গে জমির এওয়াজ (জমির বদলে জমি) দলিল হয়। পরবর্তীকালে জমি নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

ওয়ারিশ সূত্রে রজব আলী শেখের বসভিটা সংলগ্ন এওয়াজভুক্ত জমি দাবি করেন ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম। এ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন রজব আলী শেখ। মামলার সূত্রে জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত।

এমতাবস্থায় বুধবার সকালে ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে জমি দখল করেন এবং ট্রাক্টর দিয়ে জমির ফসল নষ্ট করে চাষ দেন। এছাড়াও জমিতে রজব আলী শেখের লাগানো বেশকিছু গাছ কেটে নিয়ে যান আমিরুল ইসলাম ও তার লোকজন। এসময় জমিতে বেশকিছু লাল নিশানা টাঙিয়ে দেন ইউপি সদস্যের লোকজন।

ভুক্তভোগী রজব আলী শেখ বলেন, এওয়াজ রেজিস্ট্রির পর ৪০ বছর ধরে আমি এই জমি ভোগদখল করে আসছি। আমার কাছ থেকে যে জমি এওয়াজ রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয়েছে, সেই জমি তারা অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখন তারা বলছেন- এওয়াজ রেজিস্ট্রি মানি না- এই জমি আমাদের। আমি আদালতে মামলাও করেছি। তা স্বত্বেও আজ সন্ত্রাসী ভাড়া করে জমি দখল করে আমার গাছগাছালি সব কেটে নিয়ে গেছে। জমিতে মসুরসহ ফসল আবাদ করে ছিলাম, তাও নষ্ট করে দিয়েছে।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি একাধিকবার তাদের সঙ্গে শালিসি বৈঠকে বসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা বৈঠকে হাজির হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আজকে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। আর বলেছি- যদি তারা আদালতে জমি পেয়ে যায় তাহলে আমরা যা ক্ষতি করেছে তার ক্ষতিপূরণ দিব।

এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের পুলিশ গিয়েছিল। যেহেতু সেখানে মামলা চলমান রয়েছে তাই সেখানে গাছ কেটে নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি, পরবর্তী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।