শফিয়েল আলম সুমন, ময়মনসিংহ
পিবিআই পরিচয়ধারী প্রতারক চক্রের অন্যতম প্রধান আসামি আব্দুল কাইয়ুম অনিককে গ্রেফতার করেছে পিবিআই, ময়মনসিংহ। গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) গভীর রাত ২টার দিকে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার উচাখিলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মো. আব্দুর রাশেদ ৩৫ রাশিদুল ইসলাম রাশিদ (৩০) ঈশ্বরগঞ্জ থানা উচাখিলাস্থ তার সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবস্থানকালীন সময়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিজেকে পিবিআই ময়মনসিংহের এসআই ফারদিন আহম্মেদ পরিচয় দিয়ে কল করেন।
এ সময় তিনি বলেন, তোমার নামে পিবিআইতে একটি মামলা হয়েছে এবং মামলার ওয়ারেন্ট আছে। তুমি আমাদের নগদ/বিকাশ নম্বরে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা পাঠাও, আমরা আসব না, মামলাটি এখানে শেষ করে দিব। আর তোমার ইমু নম্বরটি দাও। আমরা মামলার কপি ও ওয়ারেন্ট পাঠাচ্ছি।
রাশিদুল ইসলাম তার ইমু নাম্বারটি অজ্ঞাত প্রতারকদের দিলে তারা রাশিদুলের ইমু নাম্বারের আইডিতে পুলিশি মনোগ্রাম যুক্ত একটি ভুয়া প্রাথমিক তথ্য বিবরণীর কপি প্রেরণ করে। যাহা প্রতারক চক্র সুচতুরতার সাথে কাল্পনিক এফআইআরটি তৈরি করেছিল।
যাতে আসামির কলামে “এপি-স্কুল রোড, উচাখিলা, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মো. রাশিদুল ইসলাম রাশিদ লেখা”।
তদন্তকারী কর্মকর্তার কলামে মামলাটি পুলিশ উপ পুলিশ পরিদর্শক ফারদিন আহম্মেদ, জেলা পিবিআই তদন্ত তদারকি করবেন” মর্মে লেখা আছে। পরবর্তীকালে গত ৩ জানুয়ারি সকালে ও বিকালে অজ্ঞাত প্রতারকরা রাশিদুলের মোবাইল নম্বরে ফোন করে তাদের নগদে/বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলে এবং টাকা না পাঠালে পিবিআই অফিস ময়নার মোড়, ময়মনসিংহে টাকা নিয়ে আসতে বলে। রাশিদুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে তার পরিচিতজনদের সাথে আলোচনা করে পিবিআই, ময়মনসিংহ অফিসে যোগাযোগ করেন।
পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা থেকে তাকে জানানো হয় ফারদিন আহম্মেদ নামে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এখানে কর্মরত নাই। তখন রাশিদুল ইসলাম পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বরাবরে একটি অভিযোগ প্রদান করেন।
তদন্ত কারী কর্মকর্তা এসআই (নি:) অমিতাভ দাস অভিযোগটির বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তারের দিক নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে অজ্ঞাতনামা প্রতারকদের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
বিষয়টি রাশিদুল ইসলামকে জানালে তিনি পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার সহযোগিতায় ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। তৎপ্রেক্ষিতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার মামলা নং-০২, তাং- ০৫/০১/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-১৭০/৩৮৫/৪২০/৪৬৮/৪৭১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। এছাড়া এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পাবলিক/সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, জাল-জালিয়াতিসহ ডিজিটাল প্রতারণার মামলা/মোকদ্দমা রয়েছে।
এ বিষয়ে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন, এটি পিবিআইএর নামে প্রতারণার মত একটি দুঃসাহসিক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। অদ্য মামলা রুজুর পরপরই প্রতারকদের গ্রেফতারে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্ষিপ্রতার সাথে গত শুক্রবার গভীর রাতে ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন উচাখিলা এলাকা হতে প্রতারক চক্রের অন্যতম প্রধান আসামি আব্দুল কাইয়ুম অনিককে গ্রেফতার করা হয়।
প্রতারক চক্রের সকল সদস্যদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য যে, এই মামলার প্রতারক চক্রের সদস্যগণ বৃহত্তর ময়মনসিংহের বাসিন্দা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড