• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মাদারীপুর-খাসেরহাট বন্দর সড়ক

সড়কের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্ভোগে ৫০ হাজার মানুষ

১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বিল দিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

  এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর

২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:৪১
সড়কের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্ভোগে ৫০ হাজার মানুষ
মাদারীপুর-খাসেরহাট বন্দর সড়কের বেহাল দশা (ছবি : অধিকার)

ঠিকাদারের অনিয়ম ও গাফিলতিতে মাদারীপুরের খোয়াজপুর থেকে কালকিনি উপজেলার খাসেরহাট বন্দরের সড়কের নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

ইতোমধ্যে ৬৬% বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে, কর্তৃপক্ষ বলছে- ৩/৪ মাসের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।

মাদারীপুর এলজিইডি’র কার্যালয় থেকে জানা গেছে, রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট থেকে কালকিনি উপজেলার খাসেরহাট বন্দর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের উদ্যোগ নেয় মাদারীপুর এলজিইডি।

যার অংশ হিসেবে- ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোহিনূর এন্টারপ্রাইজের সাথে ১৯ কোটি ৫২ লাখ খরচে রাস্তাটি নির্মাণের চুক্তি হয়। পরে ওই বছরেরই ১৫ অক্টোবর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়।

যা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত সড়কটির প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ বাকী রয়ে গেছে। এদিকে সড়কটির নির্মাণ কাজে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খোয়াজপুরের টেকেরহাট থেকে খাসেরহাট সড়কের নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটির কার্যাদেশ পাওয়ার পরেই দ্রুত গতিতে পুরো ১৭ কিলোমিটার সড়কে ইটের খোয়া বিছিয়ে দেয়। এবং সড়কটির খোয়াজপুর থেকে সূর্যমণি বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করে বাকি ৭ কিলোমিটার পথ গত দুই বছর ধরে ফেলে রাখে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এই সড়ক ব্যবহার করা চলাচলকারী প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

সূর্যমণি গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি ব্যবহার করে শুধু মাদারীপুর জেলায় নয়। আমাদের আরেক প্রতিবেশী জেলা শরীয়তপুরেও এখানের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। তাছাড়া ঢাকায় যায়। কিন্তু প্রায় দুই বছর ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তাটি নির্মাণ কাজ না করে ইট সুরকি দিয়ে ফেলে রাখায় আমাদের চলাচলে খুব কষ্ট হয়।

এই সড়ক ব্যবহারকারী ইজিবাইক চালক আবদুর রশিদ বলেন, আমি এই সড়কের খাসেরহাট থেকে সূর্যমণি বাজার হয়ে টেকেরহাট পর্যন্ত গাড়ি চালাই। রাস্তার এক সাইড ভাল থাকলেও খাসেরহাটের সাইডের অবস্থা ভাল না। অনেক বছর হয়ে গেছে রাস্তা ঠিক করে না। এতে আমাদের গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়।

তিনি আরও বলেন, যাত্রীদেরও কষ্ট হয়। এছাড়া রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার দুইপাশে মাটির সুরক্ষা দেয়াল তৈরি না করেই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে চরম অনিয়ম হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আশরাফ খান বলেন, রাস্তাটির নির্মাণ কাজের শেষ করার জন্য নতুন করে মেয়াদ বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। আশা করছি, আগামী ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যেই সড়কটির পুরা কাজ শেষ হবে।

তিনি বলেন, রাস্তায় যাতে অনিয়ম করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।

মাদারীপুর এলজিইডির হিসাব বিভাগ থেকে জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বিল দিয়েছে। যা কাজের অগ্রগতির চেয়ে অনেক বেশি বিল প্রদান করা হয়েছে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড