মো. আকাশ, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির গনসমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে বেশ কিছুদিন যাবত রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত রয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের উপর ককটেল নিক্ষেপ ও মহাসড়কে নাশকতা করে বিস্ফোরক করার অভিযোগের বিএনপি, জামায়াত ও নাগরিক ঐক্যের ৯৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়।
দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেফতারের ধারাবাহিকতার বিশেষ অভিযানে চার দিনে ১৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার এজাহারে দেখা গেছে।
গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাতে মিজমিজি সিআই খোলা এলাকায় ১০ ডিসেম্বর নাশকতার পরিকল্পনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গোপন মিটিং সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে থাকা অভিযুক্তরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের উপর ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা নিজেদের আত্মরক্ষায় পাল্টা ১১ রাউন্ড গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে অভিযুক্তরা।
তারা পালিয়ে গেলে পুলিশ সেখান থেকে চারটি অবিস্ফোরিত ককটেল ও একটি বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত উদ্ধার করে। পরের দিন (২৭ নভেম্বর) পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে বিএনপির ৩৯ জন নেতাকর্মীদের নামে একটি মামলা দায়ের করে।
এরপর গেল বুধবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এবং মাদানীনগর এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী মশাল মিছিল নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করলে। পরের দিন বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক দেবাশিষ কুন্ডু বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে বিএনপি, জামায়াত ইসলাম ও নাগরিক ঐক্যের ২১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
এ দিকে দুটি মামলা দায়ের করার আটদিনের মধ্যে টানা ৪ দিনের অভিযানে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলেন।
গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জন বিএনপি ও নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
সেদিন গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীরা হলেন- নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও সাবেক বিএনপির কাউন্সিলর মো. দিদার আলম (৬১), নাগরিক ঐক্যের থানার সমন্বয়ক আলী হোসেন ওরফে নূর (৪৮), নাগরিক ঐক্যের মাঠ পর্যায়ের কর্মী সংগ্রাহক মো. মেহেদী হাসান রতন (২৮), বিএনপি কর্মী মো. সুজন (২৪), মো. রুবেল (২৫) ও মো. রবিউল হাসান (২৮)।
এরপর (২ ডিসেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড থেকে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহমুদের ব্যক্তিগত সহকারী, গাড়িচালকসহ তিনজন। এর মধ্যে- কুতুবপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে ডিবি।
গ্রেফতারকৃতদের নাম হলো- মো. মহসিন, গাড়ী চালক জুয়েল আহম্মেদ ও কর্মী মো. লিটন ও ইমরান হোসেন বাবু (৩৫)।
অভিযানের ধারাবাহিকতায় (৩ ডিসেম্বর ) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলেন-- সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইল এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল মালেক ভুঁইয়ার ছেলে সাবেক থানা শ্রমিক দলের সহ সভাপতি মো. রাজিব ভুঁইয়া (৩৪), নাসিক ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সক্রিয় সদস্য মৃত ওসমান গনি মাস্টারের ছেলে মো. কাজী গোলাম কাদির (৫২) এবং ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সক্রিয় সদস্য আ. হকের ছেলে মো. সোহেল (৫০)।
সর্বশেষ রবিবার (৪ ডিসেম্বর) অভিযান চালিয়ে নাসিক ৯নং ওয়ার্ড জালকুড়ি দক্ষিণ পাড়া এলাকার বিএনপির সক্রিয় সদস্য মৃত রসূল বক্সের ছেলে জামান বক্সকে (৩৬) গ্রেফতার করেন পুলিশ।
নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান (পিপিএম বার) জানান, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে শুধুমাত্র তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। যারা মূলত নাশকতার সঙ্গে জড়িত তারাই গ্রেফতার হবে। অন্যথায় এটা কোনো রাজনৈতিকভাবে কাউকে হয়রানি করার জন্য গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড