রাকিব হাসনাত, পাবনা
ছিল অদম্য ইচ্ছাশক্তি, শুধু বাধা ছিল পারিপার্শ্বিকতা। সেই পারিপার্শ্বিকতার মধ্যেই ছেলে মেহেদী হাসানের সঙ্গে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন মা মঞ্জুয়ারা খাতুন। বেশ কৃতিত্বের সঙ্গে পাসও করেছেন। ছেলে ও মায়ের এক সঙ্গে এমন সাফল্যে পরিবারের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) চলতি বছরের এসএসসির প্রকাশিত ফলাফলে জানা যায়, পরীক্ষায় মা মঞ্জুয়ারা খাতুন পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট এবং ছেলে মেহেদী হাসান পেয়েছে জিপিএ ৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট।
জানা গেছে, মা মঞ্জুয়ারা কারিগরি বোর্ডের অধীনে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ শামীমা জাফর মৎস্য ইনস্টিটিউট থেকে এবং ছেলে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার খানমরিচ বিএম কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তাদের বাড়ি উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে। স্বামী অটো ভ্যানচালক আব্দুর রহিম ও এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে তাদের টানাপোড়নের সংসার।
মঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করার। কিন্তু নানা কারণে এতো হয়ে উঠেনি। এর মধ্যেই দুই বছর আগে খানমরিচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলাম। আর এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। আমার পড়াশোনায় আমার স্বামীও বেশ সহযোগিতা করেছে।
তিনি বলেন, আমার স্বামী অটোভ্যান চালিয়ে আমাদের সংসার ও লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছেন। তার অনুপ্রেরণা আর আমার ইচ্ছাশক্তি মিলেই এই ফলাফল করেছি। এখন উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে গেল। সুযোগ পেলে আরও পড়াশোনা করতে চাই।
মায়ের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে পাস করায় উল্লাস প্রকাশ করেন ছেলে মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, আমরা অনেক কষ্টের মাঝেও পড়ালেখা চালিয়ে গেছি। আমার মা সংসারে মাঝেও পরীক্ষা দিয়েছেন এবং বেশ ভালো ফলাফল নিয়ে পাসও করেছেন। এ জন্য আমি অত্যন্ত খুশি।
মঞ্জুয়ারার স্বামী আব্দুর রহিম জানান, স্ত্রী ও ছেলে এক সঙ্গে এসএসসি পাস করায় তিনি ভীষণ খুশি। পাসের খবর পেয়েই তিনি সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছেন। তার ইচ্ছা ছেলে-মেয়ের সাথে স্ত্রীর পড়াশোনাও চালিয়ে নিয়ে যেতে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড