মনিরুজ্জামান, নরসিংদী
নরসিংদীর মাধবদীতে থুতু ফেলার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোর মোবারক হোসেন (১৮) ওরফে শাহ আলম হত্যা মামলায় জড়িত চারজন ও শিলমান্দী এলাকায় তরুণীকে গাছের সাথে বেধে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় একজনসহ মোট পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমিন। তিনি বলেছেন, গত ১০ নভেম্বর বিকাল ৪টার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোবারক হোসেন ওরফে শাহালম (১৮) তার কর্মস্থল হতে রিক্সা যোগে বাড়ি ফিরার পথে বাহাদুরপুরে পাকা রাস্তার মাথায় এসে থুথু ফেললে তা ইয়াছিন মিয়ার পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এতে ইয়াছিন ক্ষিপ্ত হয়ে মোবারককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। ইতোপূর্বে ও নিহত মোবারক ও ইয়াছিনের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জেরে বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় একাধিক বার ঝগড়া বিবাদ ও মারামারি হয়। উক্ত ঝগড়া বিবাদকে কেন্দ্র করে ইয়াছিন ও তার সহযোগীরা পরিকল্পনা করে মোবারককে মারার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাধবদী থানাধীন দক্ষিণ বিরামপুর গ্রামের আউয়ালের চায়ের দোকানের সামনে মোবারক হোসেন ওরফে শাহালমকে একা পেয়ে ইয়াছিন ও তার অন্যান্য সহযোগীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের হাতে থাকা লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল ও ছুরি নিয়ে মোবারকের উপর হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন আহত মোবারককে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরপর গত ১২ নভেম্বর (শনিবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবারক মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে মাধবদী থানায় মামলা দায়ের করে।
মাধবদী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত চার আসামিকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মাধবদী থানাধীন দক্ষিণ বিরামপুর গ্রামের আলী আহম্মেদের ছেলে আরাফাত (১৯), একই থানার দড়িপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে অলিউল্লাহ (২১), মধ্য বিরামপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রাহাত (১৮) ও দড়িপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে অলি (১৮)। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এছাড়া গত ১০ নভেম্বর সকাল ১০টায় নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হযরত আলীর বাড়ীর পাশে আম গাছের সাথে এক তরুণীকে বেঁধে গনেরগাঁও গ্রামের মালু মিয়ার ছেলে মো. মজিবুর রহমান (৬০), মুজিবর রহমানের দুই ছেলে মো. নাঈম (৩০) ও মো. নাজমুলসহ (৩৪) অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন মিলে মারপিট, নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে আমগাছ থেকে বাধন খুলে মুক্ত করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। পরে নির্যাতিতা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ পরিদর্শক এরশাদ উল্লাহর নেতৃত্বে উপ পরিদর্শক শামীম হোসেনসহ নরসিংদী মডেল থানার একটি চৌকস দল ঘটনার সাথে জড়িত মো. মজিবুর রহমানকে (৬০) গ্রেফতার করেন।
এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে ও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড