এম. মোবারক হোসাইন
উনিশ শতকের প্রথম দিকে এই অঞ্চলটি পর্যায়ক্রমে শাসিত হয়েছে প্রাগ-জ্যোতিষ, কামরূপ, কামতা, কুচ বিহার ও গৌর রাজ্যের রাজা, বাদশা, সুবাদার এবং বৈকুন্ঠপুর অঙ্গ রাজ্যের দেশীয় রাজা ও ভূস্বামীদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে ছিল এলাকাটি।
খ্রি. ২য়, ৩য় শতকের মধ্যে রাজা শালিবাহন, রাজা পৃথু এবং রাজা জল্লেশ এই পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ও জেলার ভিতরগড় এলাকায় রাজ্য ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে তুলেছিলেন।
সে সময়ের কয়েকটি মন্দির পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া সদরের পুরাতন বাজার এলাকাজুড়ে রয়েছে। এদের মধ্যে শিব, কালি মন্দিরগুলি সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে খুবই তাৎপর্য বহন করে। হাজার বছরের গৌরব-গাঁথা ও প্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্যের অগণিত স্মৃতিমণ্ডিত এই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উপসনালয়গুলো আজ অবহেলা অযত্নে কালের ওতলে হারিয়ে যেতে বসেছে।
পঞ্চগড় তেতুলিয়া সদরের পুরাতন বাজার সংলগ্ন মহানন্দা নদীর তীরে বাংলাদেশ -ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় এই শিব মন্দিরটি অবস্থিত।
এলাকাবাসী ও সনাতন ধর্মীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আনুমানিক মন্দিরগুলি ১৯২০ খ্রি. তৈরী হতে পারে। এটি বাংলাদেশ - ভারত সীমান্তের খুব কাছে মন্দিরটি নির্মিত হয়।
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে এলাকাটি জনবসতি কম ছিল কিন্তু সনাতন ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাসহ অন্য পুজাও ধুমধাম করে পালন করা হতো। আর সেই উৎসবে মাতে সবাই। ঢাকের তালে তালে আনন্দে মেতে উঠত। সব পূজামণ্ডপ সাজে আড়ম্বর সাজে। সুসজ্জিত প্রতিমাগুলো মন্দিরে মন্দিরে শোভা পেতো।
এলাকাবাসী ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক সূবর্ণ কেতু দাস (৬৫) বলেন, ‘বর্তমানে অবহেলার কারণে মন্দিরটির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সীমান্ত এলাকায় হওয়ায় সেখানে ধর্মীয় লোকেরা সেখানে গিয়ে পূজো দিতে সংকোচ বোধ করেন। বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়ে আছে। এই শিব মন্দিরটি ১৯১০ সালে নির্মিত হতে পারে।’
তেতুলিয়া সার্বজনীন শিব মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী বিমল চন্দ্র সেন (৭০) বলেন, তেতুলিয়ায় বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে যেমন - ২ শিব মন্দির, ১ কালি মন্দির। এদের মধ্যে ১টি শিব মন্দিরে পুজা অর্চনা হয়ে থাকে।তবে অবহেলা অযত্নের কারণে পুরাতন বাজার সংলগ্ন কালি মন্দির ও শিব মন্দিরটি দিন দিন ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে। যদি এমতাবস্থায় এটির সংরক্ষণ করা না যায় তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম কি দেখবে। তাই এটির সংরক্ষরণের দাবি জানায়।
তেতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব রেজাউল করিম শাহিন বলেন, উপজেলায় বেশ কয়েকটি পুরনো মন্দির রয়েছে।তবে সদরের ১টি (বড়) শিব মন্দির ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় মেরামত,রং এর কাজ করা হয়েছে।
কিছু কথা:
বর্তমানে মন্দিরটি আছে কিন্তু কার্যক্রম বা লোকজন বলতে গেলে কেউ নেই।সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় সেখানে আর কেউ পূজো দিতে যায় না। এখন এই মন্দিরের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। মন্দিরটির সংস্কারের প্রয়োজন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড