তন্ময় কুমার সাহা, রায়পুরা (নরসিংদী)
নরসিংদীর রায়পুরার চান্দেরকান্দি ও উত্তর বাখরনগর ইউপির দুই ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি সহিংসতায় দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ আসামি করা হয়েছে প্রায় ৪০০ জনকে।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।
রবিবার সন্ধ্যায় তৃতীয় ধাপের ভোট শেষে ফলাফল গণনার সময় ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে চান্দেরকান্দিতে আরিফ মিয়া (২৪) ও উত্তর বাখরনগরে ফরিদ মিয়া (৩২) পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
রবিবার রাতে রায়পুরা থানায় চান্দেরকান্দির ঘটনায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দেরকান্দি পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আর উত্তর বাখরনগরের ঘটনায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাখরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল কাদের সরকার বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
চান্দেরকান্দিতে নিহত আরিফ মিয়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের জানখারটেক এলাকার চান মিয়ার ছেলে। পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আরিফ নির্বাচনের কাজে পুলিশের সঙ্গে ওই ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন। অন্যদিকে উত্তর বাখরনগরে নিহত ফরিদ মিয়া উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের মুজিব মিয়ার ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চান্দেরকান্দি ও উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের দুটি ভোট কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীরা ভোট গণনা শেষে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও নিবার্চনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ব্যালট বাক্স রক্ষা, জানের নিরাপত্তায় পুলিশ শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ সময় হামলাকারীরা টেঁটা, বল্লম, আগ্নেয়াস্থ নিয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। চান্দেরকান্দিতে হামলাকারীদের ছোড়া ইট পাটকেল ও গুলিতে পুলিশ কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান ও পুলিশদের বহনকারী সিএনজি ড্রাইভার আরিফ গুরুতর আহত হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর আরিফ মিয়াকে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় আবদুল হান্নান (৪৫) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
এ ছাড়া উত্তর বাখরনগরে ভোট গণনা শেষে মেম্বার পদপ্রার্থী পণ্ডিত মিয়া নিজের পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনা বুঝতে পেরে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও নিবার্চনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন এবং নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ব্যালট বাক্স রক্ষা, জানের নিরাপত্তায় পুলিশ শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে। সংঘর্ষে ফরিদ মিয়া নামে একজন গুরুতর আহত হয়। তাকে রাতে ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, ওই দুই কেন্দ্রে ব্যালট পেপার গণনার সময় ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল দুই পক্ষের সমর্থকেরা। ব্যালট বাক্স রক্ষা ও জানের নিরাপত্তায় পুলিশ শটগানের গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় আরিফ মিয়া ও ফরিদ মিয়া নামের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। দুই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড