• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শৈলকুপায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছীরা

  রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ)

২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৭:১২
শৈলকুপায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছীরা
খেজুর গাছ পরিচর্যায় গাছীরা । ছবি : অধিকার

হেমন্তের শুরুতে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। সকালবেলা দরোজা খুলতেই একঝাঁক কুহেলি বিন্দু শীতলতার পরশ বুলিয়ে দেয় গায়। ধবধবে কুয়াশা শুভ্রতার চাদর বিছিয়ে দেয় চারদিকে। শীতকালের সঙ্গে খেজুর রস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেন একে অন্যের পরম বন্ধু।

কনকনে শীতের সকালে এক গ্লাস ঠান্ডা রস শরীরে এনে দেয় সজীবতা। গ্রামে শীতকালের সকালটা খেজুর রস ছাড়া যেন জমেই না। স্বাদে আর গন্ধে এককথায় অমৃত। পাখিরাও সে স্বাদ উপভোগ করা থেকে বাদ যায় না। মাটির হাঁড়িতে পাখিরা সুরু ঠোঁট দিয়ে চুকচুক করে পান করে সুমিষ্ট রস।

ঝিনাইদহের শৈলকুপার গাছিরা রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। শৈলকুপার জন জীবনের স্বাভাবিক জীবনে পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। রাস্তায়, জমিতে কিংবা পুকুরে, মাঠে-ঘাটে খেজুরের গাছের আশেপাশে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। কয়েকদিনের মধ্যেই রস ঘরে আসবে আর তা দিয়ে তৈরি হবে নানা উপকরণ। গাছ চাচা-ছোলার কাজ শেষ হলেও এখন নলি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। তাই শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই গাছিদের সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। এমন কোনো বাড়ি নেই যে সেখানে খেজুরের গাছ নেই। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই লক্ষ্য করা যায় খেজুরের গাছ।

গাছ কেটে যারা প্রতিনিয়ত রস আহরণ করে স্থানীয় ভাষায় তাদেরকে গাছি বলা হয়। আর যে নলের মাধ্যমে রস ফোটা ফোটা করে পড়ে তাকে নলি বলা হয়। প্রথমে গাছের মাথার ডগা পরিষ্কার করা কষ্ট হলেও যখন গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয় তখন আর গাছির আনন্দের শেষ থাকে না। গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে প্রতিদিন বিকাল বেলা গাছ কেটে নলির মুখে পাত্র বসিয়ে পরের দিন খুব সকালে গাছ থেকে রসসহ পাত্র নামিয়ে ফেলে। এভাবে একে একে করে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে থাকে। খেজুরের মিষ্টি রস যে একবার পান করেছে, তার স্বাদ কোনো দিন সে ভুলতে পারবে না।

খেজুর রসের পায়েস ও ক্ষীর তো খুবই মজাদার। আবার এই রস দিয়ে তৈরি হয় পাটালি গুড়। শীত মৌসুমে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা গাছ খেকে রস আহরণ করে আর তা দিয়ে পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। এই রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সেইসাথে গুড় পাটালীর কদরও রয়েছে অনেক।

খেজুরের রসের তৈরি যাবতীয় উপকরণ এনে দেয় বাড়তি স্বাদ। ক-দিন পরেই গাছি মধুর সুরে গাইতে থাকবে- “হারা ধুয়ে দে-বউ গাছ কাটতি যাবো”

বড় মৌকুড়ি গ্রামের গাছি সেলিম বলেন, আর মাত্র কয়েক দিন পরই গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হবে। প্রতি বছর শীত মৌসুম এলেই আমরা গাছ কেটে পর্যায়ক্রমে রস সংগ্রহের উপযোগী করে থাকি। কাচা রস বিক্রি করি আবার রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে থাকি। এ বছর আমি ১৫০ টি গাছ রসের জন্য তৈরি করেছি।

আরও পড়ুন : কুড়িগ্রামে ভোটার খুঁজে পাচ্ছে না প্রার্থীরা

গাছিরা এখন চাচাছোলা আর নলি বসানো নিয়ে ব্যস্ত আর কয়টা দিন পরেই রস আহরণ শুরু হবে সেইসাথে তাদের মুখে হাসি ফুটবে। প্রায় গাছিই শীত মৌসুমের জন্য অপেক্ষায় থাকে কারণ তারা এই রস আহরণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড