• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ছাগল চুরি করে খেয়েছেন ডাক্তাররা, অভিযোগ চা বিক্রেতার

  মো. রুম্মান হাওলাদার, পিরোজপুর (বরিশাল)

২৪ নভেম্বর ২০২১, ১০:১২
ছাগল চুরি করে খেয়েছেন ডাক্তাররা, অভিযোগ চা বিক্রেতার
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি : অধিকার

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় এক চা–বিক্রেতার ছাগল জবাই করে খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে এই সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ করেন ছাগলের মালিক চা বিক্রেতা আবদুল লায়েক ফরাজী। আর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাশার শেখের বিরুদ্ধেও ছাগল চুরির অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে বাশার শেখ বলেন, গত শুক্রবার রাতে ছাগলটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ কয়েক চিকিৎসক ছাগল জবাই করে খেয়েছেন। চুরি করা ছাগল জবাই করে খাওয়া চিকিৎসকদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এক সংবাদকর্মী এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পাশে আবদুল লায়েক ফরাজীর চায়ের দোকান। চা বিক্রি করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। পাশাপাশি তিনি কয়েকটি ছাগল লালন-পালন করেন। গত শুক্রবার দুপুরে লায়েক ফরাজীর একটি খাসি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে চুরি হয়ে যায়। সোমবার দুপুরে লায়েক ফরাজী চামড়া ব্যবসায়ী বিশ্বনাথের কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া ছাগলের চামড়া উদ্ধার করেন।

বিশ্বনাথ জানান, চামড়াটি হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাশার শেখ তাকে দিয়েছেন। এরপর লায়েক ফরাজী চামড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাশার শেখ বলেন, ‘চামড়াটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ভূরিভোজের জন্য জবাই দেওয়া ছাগলের। গত শুক্রবার রাতে স্যারেরা ছাগলটি খেয়েছেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রান্নার দায়িত্বে থাকা খাদিজা বেগম বলেন, ‘শুক্রবার একটি ছাগল রান্না করে স্যারেরা (চিকিৎসকেরা) খেয়েছেন।’ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কক্ষে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। সেখানে কয়েকজন চিকিৎসক ভোজে অংশ নেন বলে জানান তিনি।

ভূরিভোজে অংশ নেওয়া তিন চিকিৎসকের দাবি, তারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলে বারীর দাওয়াতে যান। সেখানে খাওয়া মাংস চুরি করা ছাগলের নাকি কেনা, তা তাঁদের জানা নেই।

ভূরিভোজে অংশ নেওয়া এক নারী চিকিৎসক বলেন, ‘শুক্রবার রাতে স্যার (ফজলে বারী) ফোন দিয়ে আমাকে সেখানে ডেকে নেন। এরপর আমরা ছাগলের মাংস খেয়েছি।’

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সজল হোসেন হাওলাদার জানান, শুক্রবার দুপুরে তিনি তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালের দোতলায় একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাশারসহ তিন ব্যক্তি একটি খাসি দোতলায় নিয়ে হাসপাতালের কেবিনের একটি শৌচাগারে রাখেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফজলে বারী মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার বাসায় রান্না করা ছাগলের মাংস চিকিৎসকদের দাওয়াত দিয়ে খাইয়েছি। ছাগলের মাংস আমার বাড়ি থেকে আনা। ছাগল চুরির বিষয়টি আমার জানা নেই। স্থানীয় এক সাংবাদিক ছাগল চুরির ঘটনায় আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করছেন।’

ইউএনও মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, আবদুল লায়েক ফরাজীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানকেও অভিযোগ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন : কুড়িগ্রামে ট্রাকের ধাক্কায় সেনা সদস্য নিহত

নাজিরপুর থানার ওসি মো. আশ্রাফুজ্জামান বলেন, ছাগল চুরির একটি অভিযোগ থানায় জমা হয়েছে।‘আমি থানায় ছিলাম না। তাই ওই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়নি। তবে এর আগে হাসপাতালের মধ্যে ছাগলের ঘাস খাওয়া নিয়ে একবার সমস্যা হয়েছিল।’

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড