নাসিম আজাদ, পলাশ (নরসিংদী)
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভা থেকে পূর্বদিকে একদম শেষ প্রান্তে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন পদ্মবিল। দেখলে যে কারো নজর কাড়বে। ভেসে থাকা পদ্ম পাতার উপর পাখির ছানাগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। পাখির মাথা ও গলা সাদা।
ঘাড়টা রেশমি সোনালি হলুদ। পিঠ চকলেট পাটকিলে। ডানার পাশটা ধবধবে সাদা। দেহের তুলনায় লেজ বেশ লম্বা। কাস্তের মতো বাঁকানো। পেটের নিচটা কালচে। এরা শীত মৌসুমে রঙ বদলায়। চকলেট পাটকিল থেকে ফিকে পাটকিলে বর্ণ ধারণ করে এবং বুকের উপরে ‘ভি’ আকৃতির কালো নেকলেসের মতো দেখা যায়।
শীতে এর আরও কিছু পরিবর্তন নজরে পড়ে। যেমন প্রজনন ঋতুতে এদের লেজটা থাকে লম্বা, কিন্তু এ সময় লেজটা তুলনামূলকভাবে খাটো দেখায়। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম; পার্থক্য শুধু আকারে। স্ত্রী পাখি পুরুষের তুলনায় খানিকটা বড়। জলময়ূরের প্রধান খাবার শস্যদানা, জলজ ফল ও কীটপতঙ্গ। সাধারণত এদের বিচরণ জলাশয়ে। এরা ডাঙ্গায় কম বিচরণ করে। এখন সে রকমটি আর দেখা যায় না। শিকাড়ীদের অধিক দৌড়াতের কারণে এ প্রজাতির পাখির সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
জলময়ূরের প্রজনন সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর। এ সময় এরা‘মিই-ও-মিই-ও’ সুরে ডাকাডাকি করে। প্রজনন ঋতুতে জলময়ূরী হন্যে হয়ে পুরুষ জলময়ূরকে খুঁজতে থাকে। এ সময় অন্য জলময়ূরীর সঙ্গে যে কোনো জলময়ূরের ঘোরাফেরা করতে দেখলে প্রচণ্ড হিংসা হয় এদের। দুই ময়ূরীর মাঝে ঝগড়া বেঁধে যায়। পরিশেষে জিতে যাওয়া জলময়ূরীর সঙ্গে জলময়ূরের মিলন ঘটে।
ঘর বাঁধার সপ্তাহ খানেক পরে জলে ভাসা লতাগুল্মের ওপর বাসা বানিয়ে জলময়ূরী ডিম পেড়ে পালিয়ে যায়। প্রজনন ঋতুতে একেকটি ময়ূরী ৭-৮ বার ঘর বাঁধে এবং ডিম দিতেও দেখা যায়। প্রতিবার ২-৪টি করে ডিম দেয়। ডিমে তা দেয়াও বাচ্চাদের দেখভালের দায়িত্ব পুরুষ পাখিকে নিতে হয়। শিকারিদের দৌড়ত কমাতে ও অভয়ারণ্য হিসেবে পদ্মবিলকে দ্রুত চিহ্নিত করে জলময়ূর রক্ষা করতে এলাকাবাসী দাবি জানান।
ওডি/ এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড