• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উলিপুরে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, আটক ১৮

  হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম

১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৮:০৮
প্রতিবাদ মিছিল করছেন মুসল্লিরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কুড়িগ্রামের উলিপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও আইনশৃঙ্খখলার অবনতি রোধে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার (১৩ অক্টোবর) গভীর রাত থেকে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে টহল দিচ্ছে বিজিবি। এদিকে উলিপুরের ৩টি ইউনিয়নের ৭টি মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

কুড়িগ্রামের ২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল জামাল হোসেন জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের চাহিদার ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সুবেদার জামিউর দুই প্লাটুনের দায়িত্বে আছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম ফেরদৌস পুরো টিমকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির বলেন, এখন পর্যন্ত ভিডিয়ো ফুটেজ ও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

তবে পুলিশ কারো নাম জানাতে না চাইলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে একজন জামায়াত নেতাসহ কয়েকজন বিএনপির সমর্থক রয়েছেন।

কুড়িগ্রাম-৩ আসনের এমপি অধ্যাপক এমএ মতিন অভিযোগ করেছেন, একটি রাজনৈতিক দলের ইঙ্গিতে অন্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি উলিপুরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দলীয় কর্মীদের সক্রিয় উপস্থিতি সত্ত্বেও একের পর হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কিশোরপুরে পুলিশকে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো না। বরং হামলার সময় পুলিশের রহস্যজনক নিষ্ক্রিয় ভূমিকা ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় দুই দফায় কুমিল্লার ঘটনার জেরে উলিপুর বড় মসজিদ থেকে একদল মুসল্লি শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর রাত ১০টা পর থেকে মন্দিরে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসীরা জানান, হামলাকারীদের বেশিরভাগই যুবক ছিল।

পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মণপাড়া দুর্গা মন্দিরের পুরোহিত জীবন কৃষ্ণ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, রাত সাড়ে দশটার দিকে সাত দরগাহ বাজারের দিক থেকে মিছিল নিয়ে প্রায় ১ হাজার থেকে ১২শ মানুষ এসে মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে প্রতিমাসহ পূজার সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়।

হোকডাঙা ভারতপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক কমলেন্দু রায় জানান, রাত বারোটার দিকে লাঠিসোটা নিয়ে একদল লোক এসে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর চালায়। এছাড়াও পাশের বাড়িতে হামলা করে তারা।

নেফরা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নিপেন রায় বলেন, রাত এগারটার দিকে প্রায় ৫ থেকে ৭শ লোক এসে মন্দিরের গ্রিল টিন, প্রতিমা ও পাশের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এরপর খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেয়।

এছাড়াও পশ্চিম কালুডাঙ্গা সর্বজনীন দুর্গা মন্দির, থেতরাই ফাসিদাহ বাজার সার্বজনীন দুর্গামন্দির, হাতিয়া পুরাতন অনন্তপুর বাজার সার্বজনীন দুর্গামন্দির, হাতিয়া ভবেশ নমঃদাস পাড়া দুর্গা সর্বজনীন মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর চালায় তারা।

আরও পড়ুন : শিক্ষককে জেলে পাঠিয়ে ফায়দা নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম.এ মতিন, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ওয়ালিদ হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, উলিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড