ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা, লাশ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড

মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় রাসেল হাসান (৩২) নামে এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর লাশ রেললাইনে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কালামপুর খাঁজার ডেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রাসেল হাসান কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর এলাকার আব্দুল সামাদের ছেলে। তিনি স্থানীয় এপ্রেক্স কারখানার লাইন সুপারভাইজার ছিলেন।

জানা গেছে, শুক্রবার মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে রাসেলকে হত্যার পর রেললাইনে লাশ ফেলে রাখা হয়। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিলেও ঘটনার ১৯ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে যেন এক তুলকালাম কাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার, থানা ও রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কে বা কারা মুঠোফোনে রাসেলকে ডেকে পাঠায়। এরপর তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে রাত ৮টার দিকে পাশের খাঁজার ডেক এলাকায় রেললাইনের পাশে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারকে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন নিহতের লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় প্রথমে ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে- এমন ভাবলেও পরে লাশ দেখে পরিবারসহ স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন ৯৯৯-এ ফোন দিলে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ নিহতের বাড়িতে যায়। কিন্তু তারা নিহতের লাশ উদ্ধার না করে রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় রেল ষ্টেশনের লোকজন নিহতের লাশ উদ্ধার না করে চলে যায়।

এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গত ৪ থেকে ৫ দিন আগে রাসেলদের দোকানের বকেয়া আদায় নিয়ে তার সাথে কয়েকজনের কথা কাটাকাটি ও ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে এরই জেরে তাকে হত্যার পর ওই রেললাইনের পাশে লাশ ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন হলে ওই রাতেই স্থানীয় মাতব্বর, রেল ষ্টেশনের লোকজন, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

কিন্তু নিহতের লাশ দাফন না হলে ও হত্যার গুঞ্জন উঠলে শনিবার (২ অক্টোবর) সকালে আবারও কালিয়াকৈর থানা পুলিশ নিহতের বাড়িতে যায়। তবুও জটিলতার কথা বলে নিহতের লাশ উদ্ধার করেনি থানা পুলিশ। একপর্যায়ে দুপুরে রেলওয়ে পুলিশ নিহতের বাড়িতে গিয়ে জটিলতা দেখিয়ে লাশ উদ্ধারে অনীহা প্রকাশ করে। পরে নানা আলোচনা-সমালোচনা শেষে ঘটনার ১৯ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। এরপর ময়না তদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন : চোর আখ্যা দিয়ে যুবককে মারধর, বোনের শ্লীলতাহানির অভিযোগ

এ বিষয়ে জয়দেবপুর রেল জংশনের উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, লাশটি রেললাইনের পাশে না থাকায় জটিলতার সৃষ্টি হলে উদ্ধারে বিলম্ব হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম জানান, নিহতের লাশ রেললাইনের পাশে পড়ে থাকায় এটা থানার আওতায় পড়ে না। এ কারণেই আমরা লাশ উদ্ধার করিনি। রেলওয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ওডি/নিলয়