• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উত্তরণের চেষ্টায় কৃষকরা

  গাইবান্ধা প্রতিনিধি

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:০৪
গাইবান্ধা
চাষকৃত সবজি (ছবি : দৈনিক অধিকার)

গাইবান্ধায় চলতি বছরে পর পর কয়েক দফা ভয়াবহ বন্যায় স্তব্ধ করেছে কৃষকসহ খেটে খাওয়া মানুষদের। ভরা আমন মৌসুমে কৃষকের স্বপ্ন ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সুলতানপুর, বাড়াইপাড়া, ভেগিপাড়া, মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ী, পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষকরা।

বন্যায় জমির আমন ধান সব ভেসে গেলেও সেই মাঠে সবুজ সবজি লাগিয়ে নিজেরদের ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে ব্যস্ত তারা। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে ও প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টায় শীতের ঘন কুয়াশা ভেদ করে মাঠে পরিশ্রম করছে কৃষকরা।

উপজেলা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গেলেই দেখা মিলবে সবুজ শ্যামল সমৃদ্ধ মাঠ। এসব মাঠে সরিষা, আলু, ভুট্টাসহ বিভিন্ন জাতের ফসল রোপণ করতে দেখা যায়। এসব এলাকার কৃষকরা প্রতিবছরই বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় হারাতে হয় তাদের লাগানো আমন ধানের বীজতলাসহ নানা জাতের ফসল।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে কথা বলতে গেলে ভেগিপাড়া গ্রামের শওকত আলী জানান, বন্যায় চার বিঘা জমিতে আমন ধান হারিয়েছি। এবার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। তা কাটিয়ে উঠতে বন্যার পর পরই জমি তৈরি করে ২২ শতাংশ জমিতে শিম , এক বিঘা জমিতে বেগুন ও ১২ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি লাগিয়েছি। ফসল বেশ ভালো হয়েছে। সপ্তাহে ৪০ -৪৫ কেজি শিম উঠানো হয়। প্রতি কেজি শিম ৩০-৩৫ টাকা ধরে বাজারে বিক্রি করি। এছাড়াও বেগুন প্রতি কেজি ৩০ দরে বিক্রি করে থাকি। নিজেরাও খাচ্ছি। তবে কৃষি অফিস থেকে কোন সহায়তা বা পরামর্শ পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গ্রামের কৃষক সানারুল বলেন, প্রায় ৪ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। বন্যায় সব হারিয়ে ঋণ করে আলুর আবাদ করেছি। আলুর পাশাপাশি বেগুন চারা লাগিয়েছি। তবে কয়েকদিন থেকে কুয়াশা দেখা দিয়েছে। কুয়াশার হাত থেকে রক্ষা পেতে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে।

কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিংটু জানান, করতোয়া নদীর কারণে সুলতানপুর, ভেগিপাড়া, গনকপাড়া,হাসেমপুরসহ আশেপাশের গ্রাম গুলো প্রতিবছর বন্যায় প্লাবিত হয়। কৃষকরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জমিতে লাগানো ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়। ফলে নিজেদের খাদ্য সংকট দেখা দেয়। নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তারা লাউ, শিম, আলু, বেগুন সহ নানা জাতের ফসল করছে।

পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার আজিজুল ইসলাম বলেন, কয়েকবারের বন্যায় কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে । কৃষকদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার রবি ফসলের ওপর প্রণোদনা ও পুনর্বাসনের কাজ হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার চার হাজার ৩ শ কৃষকদের মাঝে সরিষা,গম,ভুট্টা,চিনা বাদামের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৫ হাজার ৩শ কৃষকদের বোরো ধানের উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন ভাবে কৃষি পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড