• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভুয়া কাগজে বনের জমি রেজিস্ট্রি করার অভিযোগে লাইসেন্স স্থগিত

  ভালুকা প্রতিনিধি

১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৯:০৫
করোনা
ছবি : সংগৃহীত

বন বিভাগের সাড়ে তিন শতাংশ জমির ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি করার অভিযোগে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় এক দলিল লেখকের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিষয়টি তা জানাজানি হয়। এর আগে রবিবার ভালুকা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।

ভালুকা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি ও ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হবিরবাড়ি মৌজার ১৮৫ নং দাগে বন বিভাগের একশ ৮০ একর জমি রয়েছে। ওই দাগের সাড়ে তিন শতাংশ জমি পঞ্চাশ লাখ টাকা মূল্য দেখিয়ে গত (১৩ অক্টোবর) ভিজিট কমিশনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করেন ভালুকা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার। রেজিস্ট্রি করা দলিলটির লেখক ভালুকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির কোষাধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন। দলিলের দাতা হবিরবাড়ি ইউনিয়নের গ্রামের মৃত মুঞ্জুরুল হকের স্ত্রী মোছা. মুক্তাজা খাতুন। গ্রহিতা একই এলাকার মৃত হোছেন আলী দপ্তরীর ছেলে সিরাজ উদ্দিন। রেজিস্ট্রি করা ওই জমিটির ওপর একটি পাঁচতলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন রয়েছে। অথচ দলিলে ভবনটির কথা উল্লেখ করা হয়নি। জমিটি গোপনে রেজিস্ট্রি হওয়ায় সন্দেহ তৈরি হয়।

পরবর্তীতে ভালুকা উপজেলা সহকারি (ভূমি) কার্যালয় ও ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে কাগজ পত্র ঘেটে দেখা যায়, মুক্তাজা খাতুনের নামজারির খতিয়ানে (ভূমি) কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরের সঙ্গে অন্য খতিয়ানের স্বাক্ষরের মিল নেই। জমি রেজিস্ট্রি করার আগে চলতি অর্থ বছরের খাজনা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সরকারি নথি পত্রে তা পাওয়া যায়নি। অথচ চলতি অর্থ বছরের খাজনা পরিশোধের রশিদটি দলিলের সঙ্গে জমা আছে বলে দাবি করেছেন সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার।

ভালুকা উপজেলা হবিরবাড়ি ইউনিয়ন (ভূমি) কর্মকর্তা জীবন কুমার বিশ্বাস দৈনিক অধিকারকে বলেন, হবিরবাড়ি মৌজায় ১৮৫ নং দাগের বেশির ভাগই বন বিভাগের জমি। ৩০৪৩ নং খারিজ খতিয়ানটি ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালে দেখানো হয়েছে । তবে নামজারিটি সন্দেহ জনক। তখন আমি এখানে কর্মরত ছিলাম না। গত কয়েকটি অর্থ বছরের খাজনাও পরিশোধ করা হয়নি।

ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন দৈনিক অধিকারকে জানান, হবিরবাড়ি মৌজার ১৮৫ নং দাগে ১৮০ একর বনের জমি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে তিন শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর লিখিত ভাবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রি বিভাগকে জানানো হয়েছে। এরপর বুধবার (১৮ নভেম্বর) ময়মনসিংহের জেলা রেজিস্ট্রার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

এর আগে গত ২১ অক্টোবর এ বিষয় নিয়ে দৈনিক অধিকার ও জাতীয় পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গতকাল বুধবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতে আসেন ময়মনসিংহের জেলা রেজিস্ট্রার মোহছেন মিয়া। এরপর তিনি হবিরবাড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন, দলিল লেখক জয়নাল আবেদীন এবং জমির গ্রহিতা সিরাজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেন ওই রেঞ্জ কর্মকর্তা।

ময়মনসিংহের জেলা রেজিস্ট্রার মোহছেন মিয়ার সরেজমিনে ভবন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার দৈনিক অধিকারকে বলেন, দলিল লেখকের সাবমিট করা কাগজ পত্রের ভিত্তিতে জমিটি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে জানা যায় ওই জমির ওপর একটি বহুতল ভবন রয়েছে। যা গোপন করেছিলেন জমির গ্রহিতা, দাতা ও দলিল লেখক। এরপর ওই ভবনের রাজস্বের টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। দলিল লেখকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাঁর লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য-গত সেপ্টেম্বের মাঝামাঝিতে তিনজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষর জাল করে জমি রেজিস্ট্রির চেষ্টার অভিযোগে দলিল লেখক হারুন অর রশিদের লাইসেন্স স্থগিত করেছেন ভালুকা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার।

ওডি/

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড