• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইদগাহে জামাত হয়না ৭ বছর, চলছে কাঠের ব্যবসা

  মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ নভেম্বর ২০২০, ০৯:১৭
মুন্সীগঞ্জ
মিরকাদিম পৌর ইদগাহ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার সবচেয়ে বড় ও পুরানো মিরকাদিম পৌর ইদগাহ। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে এখানে ইদের জামাত আদায় করেছিলেন স্থানীয় মুসল্লিরা। তবে এ বছর করোনার কারণে ইদগাহে ইদের নামাজ বন্ধ থাকলেও এর আগে সংস্কারের অভাবে ইদের নামাজ হয়নি গত ছয় বছর যাবত। এ নিয়ে সাত বছর ধরে এই ইদগাহে জামাত হচ্ছে না।

ইদগাহ কমিটি সূত্রে জানাযায়, মাঠটি ১৫০ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। স্বাধীনতার আগে থেকে এই মাঠে মিরকাদিম পৌরসভা, মুন্সীগঞ্জ সহরের বিভিন্ন এলাকা, সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়ন, চর মুক্তারপুর ও নারায়ণগঞ্জের বক্তাবলী এলাকার হাজারো মানুষ ইদের জামাত আদায় করতেন। জায়গা সংকুলান না হওয়ার কখনো এখানে ইদের জামাত হতো দুটি। কিন্তু ২০১২ সালের পর এই মাঠে আর ইদের জামাত হয়নি। সংস্কারের কথা বলে নামাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদগাহ মাঠের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে টাইলস করা প্রাচীর দিয়ে সীমানা করা। মাঠের উত্তর পাশে মাদ্রাসা। পূর্ব পাশ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। মাঠের মধ্যভাগের পশ্চিম প্রান্তে একটি সাজানো-গোছানো মিম্বার। মাঠের দক্ষিণ অংশ থেকে মিম্বার পর্যন্ত জায়গা কাঠ ব্যবসায়ীদের দখলে। সেখানে পুরনো দরজা, জানালা, কাঠ, টেবিল, বেঞ্চসহ ঘরের বিভিন্ন আসবাব বিক্রি করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাত বছর হয়েছে এই মাঠে নামাজ হয় না। মাঠ পড়ে আছে। তাই ৪ থেকে ৫ জন ব্যক্তি মাঠে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইদগাহ কমিটির এক সদস্য বলেন, কালিন্দিপাড়া, রিকাবিবাজার পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া, টেঙ্গর, রাম গোপালপুর ও নুরুপুর এলাকার ছয় সমাজের মসজিদ কমিটির সদস্যরা ইদগাহ পরিচালনা করে আসছিলেন। প্রায় ১১ বছর আগে ইদগাহ কমিটির দায়িত্ব নেন পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম। এরপর চারবার ইদের জামাত হয়। পরে মাঠ সংস্কারের কথা বলে ইদের জামাত বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে কিছুটা সংস্কার করা হলেও তা নামাজ আদায় করার উপযোগী নয়।

ইদগাহ কমিটির একজন সহ-সভাপতি বলেন, সদর উপজেলার সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মাঠ এটি। সদরে এত বড় ইদের জামাত আর কোথাও হতো না মিরকাদিম পৌরসভাসহ আশপাশের এলাকার মানুষ সবচেয়ে বড় এই জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য মুখিয়ে থাকতেন। বিষয়টি গৌরব ও ঐতিহ্যের ছিল। এতে মানুষের আনন্দ অনেক বেড়ে যেত। কিন্তু এখন মানুষ এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত।

এ বিষয়ে মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘মাঠে যারা ব্যবসা করছেন তারা গরীব মানুষ। সভাপতি হওয়ার পর কয়েক বছর ব্যক্তিগত অর্থে শামিয়ানা টানিয়ে পৌরবাসীর ইদের নামাজ আদায় করার সুযোগ করে দিয়েছি। তবে বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে নামাজ আদায় করা কষ্টকর হয়ে পড়তো। তাই মাঠ পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুইদিকের সীমানা প্রাচীর করেছি। নামাজের মিম্বার বানিয়েছি। মাঠের ইট বিছানো হয়েছে। কিছু সমস্যার কারণে মেঝের কাজ আটকে আছে।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, পৌরসভার ইদগাহ গুলো পৌর-মেয়র দেখাশুনা করেন। মিরকাদিম ইদগাহের সর্বশেষ কী সিদ্ধান্ত হয়েছে আমার জানা নেই। যদি উপজেলার প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা তা করবো।’

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড