মাদারীপুর প্রতিনিধি
গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সরকারি ভাবে মা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকলেও মাদারীপুরের পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে রাতের আধারে ইলিশ শিকার চলে। এ সময় জেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিসের অভিযানে ৫০০ টি মামলা হয়েছে। ৪২৫ জন জেলেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ১৭ লাখ ৯১ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার সকল নদীতে সরকারি ভাবে মা ইলিশ রক্ষায় গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ ছিল। তবে কিছু অসাধু জেলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আধারে মা ইলিশ ধরা অব্যাহত রাখে। এ সময় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার নিয়ে জেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিস, র্যাব, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সমন্বিত অভিযানে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে রাত দিন অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ১১৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। ৪২৫ জন জেলেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান, ৪ কোটি ৩৭ লাখ বিশ হাজার টাকা মূল্যের ১৭ লাখ ৯১ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। ৫০০টি মামলা হয়েছে। ৪৭০ কেজি ইলিশ ও অন্যান্য ২০ কেজি মাছ উদ্ধার করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অভিযানকালে উদ্ধার হওয়া ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসায় দিয়ে দেয়া হয়। ২২ দিন মাছ না ধরার জন্য জেলার ৪ হাজার জেলে পরিবারকে ৮০ মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়।
অভিযানে অংশ নেন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সানজীদা ইয়াসমিন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ, শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী শিবচরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম. রাকিবুল হাসান, আরডিসি মাহবুবুল হক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রমথ রঞ্জন ঘটক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল মামুন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবির হোসেন, শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ, শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এটিএম শামসুজ্জামান প্রমুখ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, স্মরণকালের মধ্যে মাদারীপুরে এ বছর মা ইলিশ রক্ষার জন্য কঠোর অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রতিদিন ভ্রাম্যমান আদালতের তিনটি করে টিম রাত-দিন অভিযানে অংশ নেয়। জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন মহোদয়ের আন্তরিকতায় আমরা মৎস্য অফিস, বিমান বাহিনীর হেলিকাপ্টর, র্যাব, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশ এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুব ভালো অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আমাদের কঠোর নজরদারির কারণে এ বছর জেলেরা অনেক কম মাছ ধরতে পেরেছে। এছাড়া হাট-বাজারগুলোতে কোন ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা যায়নি। প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সব সময় মনিটরিং করা হয়েছে। সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা একটি সফল অভিযান শেষ করেছি। এখন আমরা জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে নজরদারি রাখছি, যে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে তাতে কি পরিমাণ ডিম রয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা একটি রিপোর্ট ঢাকাতে পাঠাবো।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড