সোনারগাঁ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের সালাউদ্দিনের ছেলে বাবুল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই এলাকাবাসীর। তার অর্থের দাপটে সাধারণ মানুষের জমি দখল থেকে শুরু করে নিরীহ মানুষকে মারধরসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে এ পরিবারের সদস্যরা। সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেনা। তাদের এই অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন, হামলা, মিথ্যা মামলা এমনকি প্রাণ নাশের হুমকি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত সালা উদ্দিনের ছেলে বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া, লায়ন মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া বাবুল, আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়াসহ তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়ে পড়েছে এবং অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার নিরীহ মানুষ।
বাবুল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে যত অপকর্ম :
১। উপজেলার বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আকবর হোসেনের কাছ থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা দামের একটি গরু ক্রয় করেন বাবুল ভুঁইয়া। গরু বিক্রেতার টাকা এখনও পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি। পরে বিক্রেতা তার পাওনা টাকা চাইতে গেলেই মারধরের শিকার হতে হয়। ২। গোয়ালপাড়া গ্রামের জালাল মিয়া ওরফে দুলু মিয়া নামে এক ব্যক্তির বসত বাড়ির জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বাবুল তাদের বাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করেন। ওই ব্যক্তি গ্রামের মাতব্বরদের কাছে বিচার চেয়ে কোনো বিচার পাননি। অর্থের দাপটে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলেনি।
৩। গোয়ালপাড়া গ্রামের কাজী রফিকুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর বাবুল ও তার পরিবারের লোকজন রফিকুলের জায়গা নিজেদের দাবি করে কবর দিতে দেয় নি।
৪। গোয়ালপাড়া গ্রামের নুরুল হক ও তার পরিবার পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে পিটিয়ে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে। ৫। গোয়ালপাড়া গ্রামের মাহাবুব শিকদারের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয় এবং জাপানি জসিম ও জুয়েল মিয়া ১৯৯৬ সালে নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কারণে তাদেরকে বাবুল বাহিনীর লোকজন মারধর করে চুল কেটে গ্রামছাড়া করা করেছে।
৬। গোয়ালপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়ি-ঘর দখল করে নেয় বাবুল ও তার বাহিনীর লোকজন।
৭। গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজের পরিবারের সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় বাবুল বাহিনীর লোকজন তাদের পিটিয়ে আহত করে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগের নামধারী নেতা বাবুলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া সরকার পতনের আন্দোলন করে ২০১৮ সালে সোনারগাঁ থানায় তিনটি বিস্ফোরক, চেক প্রতারণাসহ একাধিক মামলা আসামি। তার মেঝো ছেলে লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল পোশাক কারখানা চাকরি ছাড়ার পর ১০-১২ বছরে কোটি টাকার মালিক বনে যান। এতে সর্বমহলে আলোচনা ও সমালোচনার পাত্র হয়েছেন তিনি।
ঢাকায় বনশ্রীতে বহুতল ভবন, ইসলামপুরের চায়না মার্কেটে ৫টি দোকান ও তার নিজ গ্রামে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন আরও একটি বহুতল ভবন। তাদের এসব অর্থের দাপটে ২০১৬ সালে বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সালাউদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়। ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে বারদী ইউনিয়নে নির্বাচন পরিচালনা করেন এ পরিবার এবং তার ভাই জসিম উদ্দিন বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একটি চক্র আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার পরিবারের কোনো সদস্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয়।
বারদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জহিরুল হক জানান, বাবুল বাহিনীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পেলেও একটি মাত্র অভিযোগের সমাধান করেছেন তিনি। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অন্য যে অভিযোগ ছিল সেগুলো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সমাধান করেছেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড