• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গৃহবধূকে রাতভর আটকে রেখে পালাক্রমে গণধর্ষণ

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

১০ অক্টোবর ২০২০, ১৬:৩৬
কুড়িগ্রাম
ছবি : সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক গৃহবধূকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গ্যাংরেপ করেছে ৫ ধর্ষক। এ ঘটনায় মামলার পর পুলিশি তৎপরতায় শনিবার দুপুরে ধর্ষক কায়সার আলী, আবু বক্কর, সোবহান আলী লিটন ও মমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে উলিপুর থানা পুলিশ। মূল আসামি রবিউল ইসলাম এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা চলছে। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ১৫দিন পূর্বে।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে শনিবার (১০ অক্টোবর) উলিপুর থানায় মামলা করলে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হয়। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রাজারঘাট এলাকায়।

মামলা ও গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পৌরসভার বলদিপাড়া গ্রামের ওই গৃহবধূ (২৫) এক সন্তানের জননী। তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলীর পুত্র ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম (৩০) তাদের বাড়িতে আসতেন এবং তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন রবিউল ইসলাম। ঘটনার দিন গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে রবিউল ইসলাম ওই গৃহবধূকে নতুন করে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন। এরপর গৃহবধূ তার দেড় বছরের শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে উলিপুর বাজারে রবিউল ইসলামের সাথে দেখা করেন।

পরে একটি অপরিচিতি অটোরিক্সাযোগে রবিউল ইসলাম ওই গৃহবধূকে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রাজারঘাট গ্রামের জনৈক আবু বক্কর (৩৫) এর ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় রবিউল ইসলামের সঙ্গী ওই এলাকার সেফাত উল্যার ছেলে কায়ছার আলী (৪০), ফকর উদ্দিনের ছেলে সোবহান আলী লিটন (৪২), আবুল হোসেনের ছেলে মমিনুল ইসলাম (৩৮) ওই গৃহবধূকে রাতভর পালাক্রমে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে ওই গৃহবধূকে ঘরের মধ্যে একা রেখে তারা সটকে পরে। এরপর গৃহবধূটি অটোরিকশা যোগে চিলমারী উপজেলাধীন তার পিতার বাড়িতে চলে যান।

গৃহবধূর শ্বশুর (নুর ইসলাম) অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার কয়েকদিন পর তার ছেলের স্ত্রী বাড়িতে ফিরে আসলে রবিউল ইসলাম পুনরায় তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে ওই গৃহবধূ রাজি না হলে রবিউল ইসলাম গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করার ভয় দেখাতে থাকেন। এতে গৃহবধূ নিরুপায় হয়ে তাকেসহ পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর আনিছুর রহমানের কাছে রবিউল ইসলামের বিচার চান। কিন্তু কাউন্সিলর কালক্ষেপণ করায় রবিউল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রাতে অভিযোগ নিয়ে থানায় যান। মামলাটি রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে (শনিবার ১০ অক্টোবর) রেকর্ড করা হয়। মামলায় রবিউল ইসলামসহ ৫জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এরপর পুলিশ তৎপরতার সাথে রাতেই অভিযান পরিচালনা করে। পরে ভোররাতের দিকে আসামী আবু বক্কর, কায়ছার আলী, সোবহান আলী লিটন ও মমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়। এখনো মামলার মূল আসামী রবিউল ইসলাম পলাতক থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

এ ব্যাপারে ওই এলাকার কাউন্সিলর আনিছুর রহমান জানান, বিষয়টি ন্যক্কারজনক। আমার কাছে গৃহবধূটি শেষ সময়ে এসেছিল। আমি অবশ্য কিছু করতে পারিনি। তার বিরুদ্ধে রবিউলের পক্ষ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রুহুল আমীন জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে শনিবার দুপুরে (১০ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড