• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঈশ্বরদীতে মাদক কারবার রমরমা

  ঈশ্বরদী প্রতিনিধি, পাবনা

০৭ অক্টোবর ২০২০, ০৮:১২
ঈশ্বরদী
পাকশী স্টেশন

কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ঈশ্বরদী আবারও মাদক কারবারের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। সড়ক, নৌ ও রেলপথে আনা বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ঈশ্বরদীতে মজুত রাখার পর বিক্রি ও বাজারজাত করা হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। মাদকের সবচেয়ে বেশি চালান আনা-নেয়া হচ্ছে ইয়াবার। অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কতিপয় সদস্য ও পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে মাদক কারবারিরা এ অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত প্রচুর টাকার ইয়াবা ও ফেন্সিডিল বিক্রি হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদক কারবারি জানান, করোনার প্রথম দিকে মাদকের কারবার কিছুদিন বন্ধ ছিল। স্থানীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের কতিপয় ব্যক্তিকে ‘খুশি’ করে তারা পুনরায় কারবার শুরু করেছেন। বর্তমানে জমজমাট কারবারের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা। এটি পরিবহনে সহজলভ্য, নিরাপদ ও তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় যুবক ও তরুণরা কারবারের পাশাপাশি সহজেই ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছে। এছাড়াও ফেন্সিডিল হেরোইন, গাঁজা, চোলাই মদসহ প্রচুর টাকার মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে ঈশ্বরদীতে।

সাঁড়া ইউনিয়নের মাঝদিয়া গ্রামের এক শিক্ষক জানান, কারবার কিছুটা কমলেও আবারও কারবারিরা মাথাচাড়া দিয়েছে। অবাধে বিক্রি হচ্ছে মাদক। তাঁর গ্রামে রয়েছেন চিহ্নিত কিছু মাদক কারবারি। তাঁরা প্রভাবশালী এবং সন্ত্রাসী। মাদকে ছেয়ে গেছে এই গ্রাম। সাঁড়া গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এই ইউনিয়নের আড়ামবাড়িয়া স্কুলের পেছনে সন্ধ্যার পর অবাধে চলে বেচাকেনা।

অপরদিকে কলেজরোড, ফতেহমোহাম্মদপুর, গোকুলনগর, পশ্চিমটেংরী কাচারীপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পাবনা সদর, আটঘরিয়া ও নাটোরের লালপুর থেকে অনেক তরুণ-যুবক নিয়মিত ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রো ও মোটরসাইকেল নিয়ে ঈশ্বরদীর চিহ্নিত স্পটে আসছে মাদক সেবনের জন্য। মাদকাসক্তের কারণে এসব পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। তরুণ-যুবকেরাও হচ্ছে বিপদগামী।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পাবনা, নাটোর ও রাজশাহীর উপজেলাসহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা দিয়ে ঈশ্বরদীতে অবাধে আনা হয় ফেন্সিডিল ও ঘুমের বিভিন্ন ওষুধ। যা আসক্তরা মাদক হিসাবে সেবন করছে। রেলপথে লোকমানপুর, আবদুলপুর স্টেশন ছাড়া কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত দিয়েও আনা হচ্ছে ফেনসিডিল ইয়াবা, হেরোইন, গাজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। কারবারিরা অধিকাংশই বয়সে তরুণ ও যুবক। দাশুড়িয়া মহাসড়ক মোড় ও পাকশী নদীর ঘাটে মাদক কারবারিদের হাত বদল হয়। এখান থেকে পাচার হয় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়।

জানা গেছে, পুলিশ মাদক কারবারিকে মাঝেমধ্যে গ্রেপ্তার করলেও অধিকাংশ সময় তারা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও কারবারিতে জড়াচ্ছেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ মো. নাসীর উদ্দীন জানান, করোনাভাইরাসের কারণে অভিযানে অসুবিধা হলেও জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত গত আট মাসে ঈশ্বরদীতে মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশ ২৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে তিন শতাধিক।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির বলেন, বর্তমানে ঈশ্বরদীতে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মাদক কারবার বন্ধের জন্য অভিযানের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড