• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

  রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

২৯ আগস্ট ২০২০, ১৫:৩০
রাঙ্গামাটি
বিপ্লব চাকমা

রাঙ্গামাটিতে একটি সমিতিতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বেকার যুবক যুবতীসহ শতশত চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অনিয়ম-অপরাধ মাসের পর মাস চলতে থাকলেও দেখার কেউ নেই। সেই সুদূর বরগুনা জেলার একটি সমিতি যার নাম 'উদয়ন সমাজ কল্যাণ সমিতি' নামে রাঙ্গামাটি শহরের টিটিসি রাস্তার মুখে একবহুতল ভবনে অফিস খুলে বসানো হয়েছে এ প্রতারণার ফাঁদ। আর এ পাতানো ফাঁদে পা দিচ্ছেন অধিকাংশ দরিদ্র, অসহায় ও বেকার যুবক-যুবতীরা।

উদয়ন সমিতির কর্পোরেট অফিস দেখানো হয়েছে ঢাকাস্থ ৪৩/১, নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ এ। কিন্তু বাস্তবে সেখানে অফিস আছে কিনা তাও সন্দেহ করছেন ভুক্তভোগীরা। কারণ, সেই অফিসের কাগজে মুঠোফোনের নাম্বার দেয়া থাকলে ও বারংবার কলকরেও সংযোগ পাওয়া যায়না। পার্শ্ববর্তী বান্দরবান জেলা শহরের বালাঘাটা এলাকার বাসিন্দা তথা কথিত সাংবাদিক নামধারী বিপ্লব চাকমা নিজেকে তিন জেলা (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি) জেলার জেলা ম্যানেজার দাবি করে এবং চট্টগ্রামও ঢাকার দু’একজনের সাথে যোগসাজস করে এ অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে গত মার্চ মাস ২০২০ইং দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসে লকডাউনের সময় থেকে।

চাকরি প্রার্থীদের বোঝানো হচ্ছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের উপর শত কোটি টাকার ফান্ড ব্যয় করা হবে তিন জেলায়। প্রথমে সার্ভে কাজ করা হবে তার পর মূলকাজ শুরু করা হবে বলা হচ্ছে। সেজন্য সমিতির ঢাকা অফিস থেকে আইডিকার্ড প্রদান, রাঙ্গামাটি থেকে ঢাকায় ফাইল নিয়ে যাওয়া এবং ইন্টারভিউ খরচ দেখিয়ে সুকৌশলে প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে ১০/২০ বিশ হাজার ক্ষেত্র বিশেষে আরো বেশী টাকা নেয়া হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।

সমিতির কাগজ পত্র থেকে জানা গেছে, চাকরী দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদ যেমন-এরিয়া ব্যবস্থাপক, শাখা ব্যবস্থাপক, সুপারভাইজার ও মাঠকর্মী দেখানো হয়েছে। জানা গেছে, বিপ্লব চাকমা প্রথমে অফিস ভাড়া নেয় জেলা শহরের কল্যাণপুরস্থ সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক এর অফিসে। জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাসিন্দা নয়ন তংচঙ্গ্যা বলেছেন, তাকে দশ হাজার টাকা দিতে হয়ে ছিল শাখা ব্যবস্থাপক পদের জন্য। আর অন্য তিনজন ৫হাজার করে দিয়ে ছিল বিপ্লব চাকমার হাতে। ঠিক একই অভিযোগ করেন নানিয়াচর উপজেলার প্রার্থী নরেন চাকমা। তিনি জানিয়েছেন, তাদের উপজেলা থেকে চারজন মিলে ৫হাজার করে ২০হাজার টাকা দিতে হয়ে ছিল।

রাঙ্গামাটি সদর এলাকার রিপনা চাকমারও সেই একই অভিযোগ। তাকে মাঠ কর্মী পদের জন্য ৫হাজার দিতে হয়ে ছিল। চাকরি পাবার আশায় অন্য জনের কাছ থেকে ধার করে ঐ টাকা দিয়েছিলাম সেই দেশ ব্যাপী লকডাউনের সময়। ঐ টাকার জন্য এখন মা-বাবার কাছ থেকে কথাশুনতে হচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু পাঁচমাস চলে গেলেও নিয়োগপত্র পায়নি। আজনা কাল, এই মাসে না হলে আগামী মাসে নিয়োগ দেয়া হবে বলে কাল ক্ষেপণ করা হচ্ছে বলেন রিপনা।

এ ব্যাপারে বিপ্লব চাকমার সাথে কথা বললে সে জানায়, প্রার্থীদের কাছ থেকে নেয়া সমস্ত টাকা তাকে হেডঅফিসে পাঠাতে হয়। যেহেতু, প্রার্থীদেরকে ঢাকায় গিয়ে ইন্টারভিউ দিলে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়তে হতো। কাজেই তাদের সুবিধার্থে এটা বাতিল করে এ কাজ রাঙামাটিতে করা হচ্ছে এবং অফিস খরচ নেয়া হচ্ছে বলে স্বীকার করে। বিপ্লব আরো জানায় যে, তারা এখনও ফান্ড পায়নি। তাই সমিতির নিজস্ব টাকা দিয়ে প্রথমে সার্ভে কাজ করা হবে তিন জেলায়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড